বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সম্মেলন রুমে বৃহস্পতিবার সকালে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে কৃষি সেক্টরে করনীয় কার্যক্রম গ্রহণ বিষয়ে আলোচনা সভা শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম উদ্যোক্তা ও ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব গণমাধ্যম কর্মী আহসান হাবিবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এর কাছে ৪০-৪৫ কেজি স্থলে ৫২-৫৪ কেজি আম নেয়া বন্ধে লিখিত আবেদন দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের একদল আম উদ্যোক্তা ও চাষী। আবেদন সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বছরে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ৫ লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদনে জড়িত চার লক্ষ আম উৎপাদনকারী। বর্তমান সরকার ও কৃষি মন্ত্রণালয় আমাদের নানান ধরনের সহযোগীতা দিয়ে আসলেও আম চাষিরা বাধ্য হয়ে আমের সঠিক ওজন দিতে না পারায় বছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে উৎপাদিত আমের প্রায় ৫’শ কোটি টাকার অতিরিক্ত আম আড়তদারদের কাছে দিতে বাধ্য হওয়ায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। পাশাপাশি রাজশাহী ও নওগাঁ জেলায় প্রায় ৩’শ কোটি টাকার অতিরিক্ত আম আড়তদারদের কাছে দিতে বাধ্য হওয়াসহ তিন জেলার আম উৎপাদকদের ৮’শ কোটি টাকার আম আড়তদারদের দিতে বাধ্য হয় প্রতিবছরই। চাঁপাইনবাবগঞ্জে উৎপাদিত আমের ৫ ভাগের ১ ভাগ উৎপাদক ও বাগান মালিকদের চাঁদা দিতে বা ৪০-৪৫ (পচনশীল পন্য হিসেব ৪৫ কেজিতে মন হিসেবে উৎপাদকদের বিক্রয়ে আপত্তি না থাকা) কেজির স্থলে ৫২-৫৪ কেজি দিতে হয় আড়তদাররকে (৪০-৪৫ কেজির স্থলে আমের ওজনে আড়তদার ৫২-৫৪ কেজি নিলেও ভোক্তার কোন লাভ নেই। শুধুমাত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জে উৎপাদিত আমের ৫ ভাগের ১ ভাগ আম চাঁদা প্রদানের আর্থিক মূল্য প্রায় ৫’শ কোটি টাকা। পাশাপাশি রাজশাহী ও নওগাঁ জেলায় প্রায় ৩‘শ কোটি টাকার অতিরিক্ত আম আড়তদারদের কাছে দিতে বাধ্য হয়। উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নওগাঁ জেলায় আম উৎপাদক প্রায় ৪ লক্ষ, আর আড়তদার রয়েছেন ৩-৪ হাজার। উদ্যোক্তা নেতৃবৃন্দরা জানান, কৃষি ও আমের জন্য সরকার নানা ভাল পরিকল্পনা নেয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ।
আমাদের দাবীপূরণ ও বাস্তবায়নে সরকারের যেমন কোন অর্থ খরচ হবেনা, তেমনি সময়ও তেমন ব্যায় হবেনা। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমরা প্রতি বছর অতিরিক্ত ৫’শ কোটি টাকার আম চাঁদা (৪০-৪৫) কেজির স্থলে ৫২-৫৪ কেজি ওজন নেয়ায়) দেয়া থেকে রক্ষা পাবার পাশাপাশি নওগাঁ ও রাজশাহী জেলায় ৩‘শ কোটি টাকাসহ আমরা তিন জেলার আম উৎপাদকারীরা প্রতি বছর ৫‘ শ -৮‘শ কোটি টাকা ক্ষতি থেকে রক্ষা পাব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, ম্যাংগো ফাউন্ডেশন এর সদস্য সচিব আহসান হাবিব, শিবগঞ্জ ম্যাংগো কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামিম, বরেন্দ্র কৃষি ও সাধারণ সম্পাদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এ্যাসোসিয়েশন মুনজের আলম, আমচাষী ও উদ্যোক্তা আতিকুর রহমান মিলন, আবু নুহু, মাসুদ রানা, রফিকুল ইসলাম, মতিউর রহমান।
ম্যাংগো ফাউন্ডেশন এর সদস্য সচিব আহসান হাবীব বলেন, ৪০/৪৫ কেজিতে মণে আম বিক্রয় করতে আম চাষিদের কোন আপত্তি নাই, কিন্তু ৫২/৫৪ কেজিতে মন বিক্রয় করে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তাই ৪০/৪৫ কেজিতে আমের মণ নির্ধারন করার জন্য কৃষিমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি। আবেদন গ্রহন করে কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ৫২/৫৪ আমের মণ আমি বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানলাম, যাতে আম চাষিদের ক্ষতি না হয়। এ বিষয়ের দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ডঃ শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ারসহ কৃষি ও ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।