বাংলাদেশের রহনপুর-সিঙ্গাবাদ রুট দিয়ে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর আশা করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ। এ নিয়ে বেশ কয়েকদফা বৈঠক করেছেন সংশ্লিষ্টরা। গণমাধ্যমে এ নিয়ে বেশ কিছু লেখালেখি হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কিংবা দায়িত্বশীল কেউ ভারত সফরে গেলে এ আলোচনা উঠে আসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য ভারত সফর ঘিরে আবারও স্বপ্ন দেখছে রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ। সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দারা। তাদের সাথে রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের আত্মিক সম্পর্ক।
তারা এ রুট দিয়ে যে কোন একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এরই অংশ হিসেবে আবারও এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবী বাস্তবায়নে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে রেলমন্ত্রীর নিকট এ দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন রহনপুর রেলবন্দর বাস্তবায়ন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। রহনপুর রেলবন্দর বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক নাজমুল হুদা খান রুবেল জানান, ব্রিটিশ সরকার ১৯১৭ সালে রহনপুর থেকে ভারত রেল যোগাযোগ স্থাপন করে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের আগ পর্যন্ত এ রুটে ট্রেন চলাচল করেছে। ১৯৬৫ সালে পাক ভারত যুদ্ধের পর রুটটি বন্ধ হয়ে যায়। ২৫ বছর পর ১৯৯০ সালে রুটটি পুনরায় চালু হয়। যা এখনো অব্যাহত আছে। এখন এ রুট দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল পন্য পরিবহন হয়ে থাকে। আগে থেকে ভারতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করতো। এই বন্দর দিয়ে প্রায় প্রতিদিন ভারত থেকে পিঁয়াজ, গম, ভুট্টা ক্লিংকার ও ফলমূল বাংলাদেশে আসে। রহনপুর থেকে রেলপথে ভারতের দূরত্ব মাত্র ১০ কিমিঃ। ভারত-নেপাল সীমান্তবর্তী স্টেশন রক্সাল ও যোগবানী স্টেশনের দূরুত্ব অনেক কম। এছাড়া এ রুটটি ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়েতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। ভারত ও নেপালের রাষ্ট্রদূত এই রেলপথ পরিদর্শন করে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের বিষয়ে মতামত দিয়েছেন। বর্তমানে রহনপুর থেকে ভারত হয়ে নেপাল রেল ট্রানজিট চালু রয়েছে। এর আগে রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনও এ রুট দিয়ে বাংলাদেশ -ভারত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল চালু করার আবেদন করেছেন। এ রুট দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হলে দু’দেশের পর্যটনের নতুন দিগন্তের সুচনা হবে। এছাড়া বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী স্টেশন রহনপুর ও ভারতের সীমান্তবর্তী স্টেশন সিঙ্গাবাদে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস অফিস নির্মাণে যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। সীমান্তের ওপারের সংসদ সদস্য শ্রী খগেন মুর্মু এ বিষয়ে তার সরকারের নিকট দাবি জানিয়েছেন বলে আমরা জেনেছি। জাতীয় সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে রেলমন্ত্রীর নিকট প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরের আলোচ্যসুচীতে বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করার আবেদন জানিয়েছে অত্রাঞ্চলের জনগণ। এবিষয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান জানান, রহনপুর-সিঙ্গাবাদ রুট দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত-নেপালের মধ্যে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করার আবেদন পেয়েছি। আমি এ বিষয়ে রেলমন্ত্রীকে একটি ডিও লেটার প্রদান করবো।