মামলার নয়দিন পরও বগুড়ায় ছাত্রলীগ নেতা সজল ঘোষ গ্রেপ্তার না হওয়ায় আবারও সড়ক অবরোধ করেছেন ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা। রবিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের সামনে শহরের সাতমাথা-বনানী সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। এতে সড়কের দুই পাশে শতশত যানবাহন আটকে বগুড়া শহরজুড়ে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, দুপুর ৩টার দিকে আইএইচটি তৃতীয় বর্ষের শাহরিয়ার সিহাব নামে এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সড়কেই বিছানায় শুয়েই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আইএইচটি শিক্ষার্থীরা জানান, প্রায় দেড় সপ্তাহ ধরে বগুড়ার আইএইচটি শিক্ষার্থীরা পাঠ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করছেন। শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিতে চলমান এই বিক্ষোভ নিরসনে শিক্ষকরা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। এমনকি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এ ছাড়া আইএইচটিতে বহিরাগত হিসেবে প্রবেশ ও শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত সজল কুমার ঘোষকেও পুলিশ এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসন প্রথম থেকেই প্রহসনের খেলায় মেতেছে। চাপে পড়ে সজলের বিরুদ্ধে মামলা নিলেও এখন তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। নয়দিন পরেও সজল গ্রেপ্তার না হয়ে দিব্যি আমাদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তৃতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের দাবি মানা হলেই আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে। প্রশাসন এতগুলো দিন পরেও কেন সজলকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি এর উত্তর কী আছে?
বগুড়া আইএইচটির অধ্যক্ষ ডা. আমায়াত উল হাছিন বলেন, এ বিষয় নিয়ে ডিসি ও এসপির সঙ্গে কথা হয়েছে। ঢাকায় ডিজির কাছে গিয়েও কথা বলেছি।
বগুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত সজলকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। পুলিশের তিনটি দল মাঠে কাজ করছে। শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির হোস্টেলের মিল ম্যানেজার ও শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলামকে মারধর করেন সজল ঘোষ। এই মারধরকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় দু’ঘণ্টা সড়ক অবরোধ রাখার পর তারা কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। তখন থেকেই তারা কলেজের ভিতরে বিক্ষোভ চালিয়ে যান। পরের দিন তিন দফা উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো-বহিরাগত সন্ত্রাসীকে আশ্রয় ও প্রশ্রয়দানকারী অধ্যক্ষ ডা. আমায়াত-উল-হাসিনের অপসারণ; সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ইভটিজিংকারী সজল ঘোষের গ্রেপ্তার ও শাস্তি এবং সব শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।
গত ২ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগ নেতা সজল কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় মামলা করা হয়। এর আগে থেকেই সজল পলাতক রয়েছেন।