প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন নামঞ্জুর হয়েছে হাইকোর্টে। তবে তাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্নে রুল জারি করেছে আদালত। সাত দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রুল জারি করে। বিএনপি মহাসচিবের পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস কাজল ও কায়সার কামাল। ঢাকার হাকিম ও জজ আদালতে ফখরুলের জামিন আবেদন নাকচ হওয়ায় হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ২৯ অক্টোবর গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে কারাগারে রয়েছেন। উল্লেখ্য, জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘সরকার পতনের’ এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। ২০ শর্তে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ। সেদিন দুপুরের আগে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরুর পর কাছেই কাকরাইল মোড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। শান্তিনগর, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং দৈনিক বাংলা মোড় এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেওয়া হয়, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করা হয় আরো ডজনখানেক যানবাহন। হামলা করা হয় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে। দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘাতে প্রাণ যায় যুবদলের মুগদা থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা শামীম মোল্লার। সংঘর্ষের মধ্যে পণ্ড হওয়া সমাবেশ থেকেই পরদিন সারাদেশে হরতালের ডাক দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৯ অক্টোবর সেই হরতালের সকালে গুলশানের বাসা থেকে ফখরুলকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। সেদিন রাতে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় রমনা থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ফখরুলকে আদালতে তোলা হয়।
এর আগে ২৯ অক্টোবর ঢাকার মহানগর হাকিম শফি উদ্দিন জামিন নাকচ করে ফখরুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে ২২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদেরও জামিন নামঞ্জুর করেন। শেষে হাইকোর্টে আসেন তাঁর আইনজীবীরা।