রাজশাহী-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থককে হাতুড়ি পেটা করার অভিযোগে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও আটজনকে আসামি করা হয়েছে। বাঘা-চারঘাট উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-৬ আসনের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চারঘাট উপজেলার সরদহ বাজারে এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আহত ৩৯ বছর বয়সী নাজির হোসেন চারঘাট উপজেলার সরদহ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাদিপুর গ্রামের ওয়াজ শেখের ছেলে।
তাকে চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে সরদহ বাজারে তার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন নাজির হোসেন। রাত ৯টার পর সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে চারঘাট পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নৌকা প্রতীকের কার্যালয়ের সামনে তাকে থামানো হয়। পরে তাকে কার্যালয়ের ভেতরে ধরে নিয়ে মারধর করা হয়। নাজিরকে হাতুড়ি, রড ও চেয়ার দিয়ে পেটানো হয়েছে; এতে তার মাথা কেটে যাওয়ায় ছয়টি সেলাই লেগেছে। এ ছাড়া নাজিরের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
এদিকে, মারধরের ঘটনায় চারঘাট পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নৌকার নির্বাচনি কার্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শামীম সরকার ও সরদহ ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আদিলসহ কয়েকজন জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন রাহেনুল হক ও তার সমর্থকরা। মামলায় তাদের আসামি করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শামীম সরকার বলেন, তার এলাকায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যদি কেউ এটা করে থাকে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, চারঘাট সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার প্রণব কুমার ও চারঘাট মডেল থানার ওসি এ এস এম সিদ্দিকুর রহমান চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে আহত নাজির হোসেনের জবাববন্দি নেন। পরে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন বলেন, মামলার পর চারঘাটে মারধর করার ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। একজনকে জখম করা হয়েছে; কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া নেওয়া হবে। এদিকে শুক্রবার ভোরে বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে দিঘা গ্রামে নৌকার অস্থায়ী নির্বাচনি অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই কার্যালয়ের আংশিক পুড়ে গেছে। তবে কে বা কারা আগুন দিয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।