সারদীয় দূর্গোৎসব। দেবীকে বিভিন্ন রং দিয়ে সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নাচোলের মৃৎশিল্পীরা। এবছর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১১টি ও পৌরসভায় ১টি মন্ডপে পূজা হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে মজুরী নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিল্পীরা। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপনে সার্বিক নিরাপত্তার প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন।
শরতের নির্মল নীল আকাশ, প্রকৃতির সবুজের সমরোহে সাদা কাশফুল, শিউলীর মনভোলানো সুগন্ধ, সাথে ঢাকের বাদ্য আর প্রতিমা তৈরিতে কারিগরের ব্যস্ততা জানান দিচ্ছে দেবী দুর্গার আগামনী বার্তা। আগামী পহেলা অক্টোবর মহাষষ্ঠির মধ্যে দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব সারদীয় দূর্গাপূজা। প্রতিমার কাজ প্রায় শেষ। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা। এ উৎসবকে ঘিরে দেবীদূর্গাকে বরণ করে নিতে চলছে মন্ডপ সাজানোর কাজ। এখন শারদীয় উৎসবে মেতে উঠার অপেক্ষায় হিন্দু সম্প্রদায়েরা। সনাতন ধর্মাবলম্বী শাস্ত্রমতে এবার দেবী দূর্গা গজে আরোহন করে মরতে আগমন করবেন এবং নৌকায় চড়ে কৈলাশে ফিরে যাবেন। আর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিমা শিল্পীরা কল্পনায় দেবী দূর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রুপ দিতে রাতভর করছেন প্রতিমা তৈরির কাজ। নিখুঁত হাতের কারুকার্য দিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তৈরি করছেন প্রতিমা। পূজার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই যেন ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন নাচোলের প্রতিমা তৈরি শিল্পীরা। তুলির আঁচড়ে ফুটে উঠেছে যেন উৎসবের সব রঙ। এখন দম ফেলার সময় নেই মৃৎশিল্পদের। গতকাল সোমবার উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রতিমা তৈরির কারিগররা বাঁশ, কাঠ, সূতা, খড় কাদামাটিসহ বিভিন্ন রকম রং দিয়ে তাদের নিখুঁত হাতের কারুকার্যে তৈরি করছে প্রতিমা। প্রতিমা তৈরির কারিগর শ্রী মন্ডা পাহান বলেন, দ্বিমাটির ফিনিশিংয়ের কাজ শেষ করে এখন চলছে রংয়ের কাজ। এদিকে আগামী ১লা অক্টোবর থেকে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। তাই সময় ঘনিয়ে আসায় কাজের চাপ অনেকটাই বেড়ে গেছে। সে কারণে সারাদিন কাজ করার পরে রাতেও কাজ করতে হচ্ছে। প্রতিমা তৈরির প্রকারভেদে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা মজুরি পাওয়া যায়। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় প্রতিমা তৈরিতেও খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তেমন একটা লাভ হবেনা বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিল্পীরা। নাচোলের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী সুধেন চন্দ্র বর্মন বলেন, আগামী পহেলা অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব শুরু হয়ে ৫-অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে দূর্গা উৎসব। এবছর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১১টি ও পৌরসভায় ১টি মন্ডপে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নাচোলের মৃৎশিল্পিরা।
নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ মিন্টু রহমান বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এবছর মোট ১২টি মন্ডপে পূজা উদযাপন হবে। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।