চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ১‘শ ৪৫টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দূর্গাপূজার বিভিন্ন মন্ডপে দশমী পূজার মাধ্যমে বুধবার সকালে শুরু হয় বিজয়া দশমীর আনুষ্ঠানিকতা। এইদিন সন্ধ্যার আগেই দেয়া হয় দেবী বিসর্জন। বুধবার (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় পূজামণ্ডপগুলোতে বিজয়া দশমী পূজা অর্চণা করে। দিনশেষে দেবী বিসর্জন দেয় ভক্তরা। দুর্গোৎসবের শেষ দিনের বিজয়া দশমীতে সকালেই পূজার মূল কাজ শেষ করে জেলার সনাতন ধর্মালম্বীরা। এরপর দেবী বিসর্জনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় সকল আনুষ্ঠানিকতা।
জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের জেলা সভাপতি অধ্যাপক কনক রঞ্জন দাস বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাধ্যমে ধর্ম-বর্ণ নির্বশেষে সকলের সহযোগিতায় সুন্দরভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব সম্পন্ন করেছি। জানামতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়ায় দুর্গোৎসব শেষ হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। আমরা হিন্দু-মুসলমান এক সাথে এ উৎসব পালন করে সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। তিনি আরও বলেন, সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির মাধ্যমে আনন্দ সবার সাথে ভাগ করে নেয়ায় প্রকৃত ধর্ম। ধর্মীয় গোঁড়ামি থাকা এবং মানুষকে ঘৃণা করা উচিৎ নয়। কনক রঞ্জন দাস আরও জানান, ‘আমরা অশুভকে বিসর্জন দিলাম। মা ফিরে গেছেন।
আমরা সকল শুভকে গ্রহণ করেছি।’ সকল অমঙ্গল দূর করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে দেশ এবং দেশের মানুষ উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে যাক, দেবীর নিকট এটাই প্রত্যাশা। নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শংকর কুমার কুন্ডু বলেন, অশুভকে দুর করতেই মর্তে দেবীর আবির্ভাব। সকল অশুভকে বিনাশ করে মা দূর্গা আজ ফিরে গেলেন। তিনি বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রেখে আমরা হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান একসাথে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করলাম। বিশ্বে এ ধর্মীয় সম্প্রীতির মডেল আমাদের বাংলাদেশ। সকল অশুভ দূরীভুত হয়ে আমার সোনার বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাক-দেবীর কাছে এ প্রার্থনা করি। উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলায় এ বছর ১’শ ৪৫টি পূজা মন্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দূর্গাপূজা উদযাপিত হয়েছে।
এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৬০টি, শিবগঞ্জ উপজেলায় ৪১টি, নাচোলে ১২টি, গোমস্তাপুরে ২৯টি এবং ভোলাহাট উপজেলায় ৩টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গাপূজা উদযাপিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আন্তরিকতায় এবং সকল শ্রেণীর মানুষের সহযোগিতায় জেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দূর্গোৎসব শেষ হয়েছে।
অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ন্ত্রণে এ মহোৎসবকে ঘিরে সেচ্ছাসেবক নির্ধারনসহ মন্ডপ ও মন্দিরের আঙিনায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। ১ অক্টোবর শারদীয় দূর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার পর থেকে ৫ অক্টোবর শেষ দিন পর্যন্ত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগন, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন।