নওগাঁর নিয়ামতপুরে মাঠে মাঠে এখন বোরো ধানের শীষ সোনালি রং ধারণ করতে শুরু করেছে। সপ্তাখানেক পর থেকে কৃষকেরা তাদের রোপিত বোরো আবাদ ঘরে তুলতে শুরু করবে। ঠিক এমনি সময় বৈশাখের তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে মাঠের ফসল। চলতি মৌসুমে উপজেলায় বোরো আবাদের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। কিন্তু হঠাৎ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাওয়ায় হিটশকে মাঠের বোরো ধানের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষক। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, অধিকাংশ এলাকায় ধান পেকে ওঠায় তাপমাত্রা বাড়লেও ধানের তেমন কোনো ক্ষতির শঙ্কা নেই। ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য বোরো ধানের জমিতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। ধানের শীষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই দু-তিন ইঞ্চি দাঁড়ানো পানি রাখতে হবে বলে কৃষি বিভাগের থেকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২২ হাজার ৫৮৫ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নে মোট বোরো আবাদ চাষাবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে। উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃষক আরিফুল ইসলাম বলেন, এবছর শুরুতেই বোরো আবাদের জন্য আবহাওয়া অনেকটা অনুকূলে ছিল। যে কারণে কোনো ঝুটঝামেলা না থাকলে বোরো আবাদের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শেষ সময়ে এ তাপমাত্রা আমাদের চিন্তায় ফেলেছে। হিটশকে বোরো ধানের ক্ষতি হলে আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।
আরেক কৃষক রানা বাবু বলেন, আমার ধান ক্ষেতের সবেমাত্র শীষ বের হয়েছে। এ বিরাজমান আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে তিনি খুবই শঙ্কিত। কিছু ধানের শীষ শুকিয়ে যাচ্ছে খরার কারণে। এত তাপমাত্রা থাকলে বোরো ধানে হিটশকের শঙ্কা থেকেই যায়। এ অবস্থায় জমিতে সব সময় পানি রাখতে হবে এবং কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুল হাসান বলেন, বিরাজমান তাপমাত্রা ধানসহ অন্যান্য ফসলের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে নিয়ামতপুরে বিস্তীর্ণ মাঠে যে বোরো আবাদ রয়েছে, তা অধিকাংশ পেকে উঠতে শুরু করেছে। ফলে এসব ধানের হিটশকে ক্ষতি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যেসব এলাকায় বোরো ধান এখনও পেকে ওঠেনি, সেসব এলাকার কৃষকদের ক্ষেতে বেশি বেশি সেচ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।