চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাদেরকে রাজস্ব তহবিল ব্যবহারে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও নৈতিক স্খখলনজনিত অভিযোগে উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ সংশোধিত ২০১১এর ১৩(১)(খ) ও (গ)ধারায় নাচোল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মাহবুব আইরিন স্বাক্ষরিত (১৯/১০/২০২২) প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
উপজেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিল ব্যবহারে অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতা এবং নৈতিক স্খলন প্রমানিত হওয়ায় নাচোল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। জারিকৃত আদেশ অবিলম্বে কার্যকরের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ওই প্রজ্ঞাপনে। স্থানীয় সরকার বিভাগের অপর এক পত্রে নাচোল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ শূণ্য ঘোষণা করে সেখানে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিল ব্যবহারে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা এবং নৈতিক স্খলনজনিত অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। উপজেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী কারণ দর্শানোর নোটিশের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের দাখিলকৃত জবাবে আনীত অভিযোগ খণ্ডনের বিষয়ে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপনে ব্যর্থ হন। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ উপজেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়ায় তাকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। নাচোল উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরকে স্বীয় পদ থেকে অপসারণ করা হলো। যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের এর সাথে এবিষয়ে কথা বলতে একধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগে উপ-পরিচালক আনিছুর রহমান মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হতে আসা প্রজ্ঞাপনটি সন্ধায় হাতে পেয়েছি। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যানের কাদেরের সঙ্গে এক নারীর আপত্তিকর অবস্থার ভিডিও ভাইরাল হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়। ওই সময় নারী কেলেঙ্কারির দায়ে অভিযুক্ত নাচোল উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদেরকে দল ও উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন করে স্থানীয় উপজেলা আওয়ামীলীগসহ এলাকাবাসী। এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের সরকারি খাদ্য গুদামে গম ও ধান ক্রয়ে দুর্নীতি, উপজেলার উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থ লুটপাট, জলাবায়ু পরিবতন তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ, প্রায় ৪’শ সরকারি পুকুর লিজ প্রদানে দূর্ণীতির একাধিক সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।