চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুরে এক স্বামী পরিত্যক্তা বৃদ্ধার ভোগ দখলীয় খাস জমি দখলে নিয়ে পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। শুধু পুকুর খনন নয়, মাটিও বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। যদিও চেয়ারম্যান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউপি’র ইসলামপুর গ্রামে এবং একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। মৃত সওদাগর আলীর স্ত্রী ভুক্তভোগী বৃদ্ধা জরিনা বেগম জানান, তার ভোগদখলীয় খাস জমিতে ৯টি আম সহ বিভিন্ন জাতের গাছ ছিল। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তিনি সে জমিটি ভোগ দখল করে আসছিলেন। কিন্তু গত ১ মার্চ সে গাছ গুলো কেটে পরিষ্কার করে সেখানে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে পুকুর খনন করে বাইরে মাটি বিক্রি করছে একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম। এ নিয়ে অসহায় বিধবা জরিনা অনেকের দারে দারে ঘুরেও এর সমাধান না পেয়ে সম্প্রতি তিনি জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাঙ্গাবাড়ি মৌজার প্রায় ৫ একর খাস জমির মধ্যে জরিনা বেগমের দখলে ছিল প্রায় দেড় একর। জরিনা বেগম তার স্বামীকে নিয়ে এ জমিটিতে বাড়ি বানিয়ে বাস করতেন। কিন্তু জমিটি তুলনামূলক নিচু হওয়ায় এবং বারবার বাড়ি ডুবে যাওয়ায় স্বামির মৃত্যুর পর অন্যের আশ্রয়ে চলে গিয়ে ঐ জমিটি উঁচু করে সেখানে বিভিন্ন জাতের গাছ লাগান। অর্থের যোগান দিতে তাকে বিক্রি করতে হয় গরু, ছাগল, হাঁস মুরগিসহ শেষ সম্বলও। ১ মার্চ আকশ্মিক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জোরপূর্বক তার সব গাছ কেটে তার জমি সহ পুরো ৫ একর খাস জমিতে পুকুর খনন শুরু করেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে চেয়ারম্যানের তোপের মুখে ফিরে আসতে বাধ্য হন। তার দাবী জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন দেয়ায় চেয়ারম্যানের পেটুয়া বাহিনী যখন তখন বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। জমিটি তার নামে লীজ আছে কিনা তার জানতে চাইলে জরিনা বেগম জানান, তিনি সহ কয়েকজন স্থানীয় ভূমি অফিসে যোগাযোগ করলে তাকে জানানো হয়, লীজ প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যার দখলে জমিটি আছে তাকেই জমি আবার দেয়া হবে। এবিষয়ে জানতে বাঙ্গাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই জায়গাটি পরিত্যক্ত ছিল। তাই পরিষ্কার করা হয়েছে। খাস জমিতে পুকুর খননের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওটা সরকারিভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে। সেখানে মাছ চাষ করবে কি না তা সরকারের বিষয়। অপরদিকে, গোমস্তাপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা খাতুন বলেন, পুকুর খননের বিষয়ে আমার জানা ছিল না। সেখানের তহসিলদার দিয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবিষয়ে বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের তহসিলদার এস মোহাম্মদ আলী জানান, ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে সেখানে গিয়ে দেখে এসেছি। সেই জায়টিতে আগেই পুকুর খনন করা হয়েছে। সেখানে সরকারিভাবে কোন পুকুর খনন করা হচ্ছে না। এব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।