রমজানের শুরু থেকেই লালমনিরহাটের বাজারে ঊর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের বাজার। এতে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলেও বাস্তবে তা সম্ভব হচ্ছে না। লালমনিরহাটের বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নিত্যপণ্যের দাম রমজানের আগে থেকেই বাড়তি ছিল। রমজান শুরুর পর ধাপে ধাপে আরও বেড়েছে। আর দাম বৃদ্ধিতে সিন্ডিকেটকে মূল কারণ হিসেবে দেখছেন ক্রেতারা। তবে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা একে অপরকে দোষারোপ করছেন। জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা। গত সপ্তাহে যে চাল বস্তাপ্রতি ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সে চাল বর্তমানে ১ হাজার ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রমজানে সেমাইয়ের চাহিদা বেশি থাকায় প্রকারভেদে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা হালি। মসুর ডাল প্রকারভেদে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কেজিতে ৫ থেকে ৬ টাকা বেড়ে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। এ ছাড়াও লবণের দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা। পেঁয়াজের দাম কমে ৬০ টাকা কেজিপ্রতি বিক্রি হলেও মরিচের দাম বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে না। খেজুরের দাম কয়েক দফা বেড়ে ডাবাস খেজুর গত সপ্তাহেও ৩ হাজার ৯০০ টাকা বিক্রি হলে বর্তমানে ৪ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১ হাজার ৬০০ টাকায় কেনা খেজুর ২ হাজার ৬০০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। কৃষির ওপর উত্তরের এ জেলার অর্থনীতি নির্ভর করে। জেলার বেশির ভাগ মানুষ নিম্ন মধ্যবিত্ত। দ্রব্যমূল্যের এমন দাম বৃদ্ধিতে অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা। লালমনিরহাট সদরের বাসিন্দা গোলাম মাহমুদ বলেন, ‘সামান্য চাকরি করে সংসার চালাই। রমজানে জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে, ছেলে-মেয়েদের চাহিদামতো কেনাকাটা করা সম্ভব না। নিত্যপ্রয়োজনীয় যেসব জিনিস রয়েছে সবগুলোর দাম হাতের নাগালের বাইরে। কীভাবে সংসার চালাব তা নিয়ে মুশকিলে পড়ে গেছি। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে দেশের মানুষ আরও কষ্টে পড়বে। কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা বাজারে ফল ব্যবসায়ী জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, ‘গত সপ্তাহে ডাবাস খেজুর ৩ হাজার ৯০০ টাকায় কিনলেও এই সপ্তাহে ৪ হাজার ১০০ টাকায় কিনতে হয়েছে। যার কারণে বাধ্য হয়ে খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়াতে হচ্ছে।’ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর লালমনিরহাটের সহকারী পরিচালক মাসুম উদ দৌলা প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা রমজানের আগে সিন্ডিকেট, অবৈধ মজুতের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করেছি। কেউ যাতে মজুত করতে না পারে সেদিকে আমাদের খেয়াল রয়েছি। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।