নির্বাচনী ফলাফল ঘোষনার পর নৌকার বিজয়োল্লাস মিছিল হতে আপেল প্রতীকের সমর্থকদের কয়েকটি দোকানঘর ভাংচুর করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষনার আগেই দেবীনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এ ভাংচুর চালানো হয়েছে বলে জানায় ভুক্তভোগী ইউসুফ (৩৫) ও শহিদুল (৩৫)। ভাংচুরের সময় ও পরবর্তীতে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হলেও সহায়তা পায়নি বলে জানায় ইউসুফ। জানা যায়, ইউসুফের পিতা হাবিবুর রহমান ও শহীদুলের পিতা সাইদুর রহমান আপন দুই ভাই। তাদের বাড়ি দেবীনগর ইউনিয়নের সাবেদ আলী মোল্লাটোলা গ্রামে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটনের আপেল প্রতীকের পক্ষে ভোট করায় দেবীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা হাফিজুর রহমানের রোষানলে পড়ে পরিবারটি। আপেলের পক্ষে ভোট করায় ভোটের আগের দিন (৩১ জানুয়ারি) রাতে হাবিবুর ও সাইদুরের বাড়িতে হামলা চালায় চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানের দলবল।
পরিবারটি হাফিজ চেয়ারম্যানের হুমকির মুখে পড়ে ভয়ে ভোটও দিতে পারেনি বলে জানায় হাবিবুর রহমানের ছেলে ইউসুফ। ইউসুফ জানায়, ভোট শেষ হবার পর কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষনা হয়। ফলাফল ঘোষনা হবার পরপরই সন্ধ্যায় ধুলাউড়ি হাটে তাদের পারভেজ মিষ্টান্ন ভান্ডার নামীয় দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে হাফিজুর রহমানের ভাই মিজানুর রহমান, ভাজিতা ফয়সাল ও তাদের দলবল। এসময় সেখানে হাফিজুর রহমান চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন বলে জানায় ইউসুফ। ইউসুফ জানায়, তার দোকানের ফ্রিজ, কফি মেশিন, চেয়ার, টেবিল ভেঙ্গে ফেলে তারা। এসময় মিস্টিসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য নষ্ট করা হয় এবং লুট করে নিয়ে যায়। দোকানে ক্যাশ বাক্সে থাকা প্রায় লক্ষাধিক টাকাও লুট করে নিয়ে যায়।
এসময় পুলিশের সহায়তা চেয়েও কোন সহযোগিতা পায়নি বলে জানায় ইউসুফ। পরে ‘৯৯৯‘ কল দিলে পুলিশ এসে তাদের তাড়িয়ে দেয়। তাদের ভয়ে এবং পুলিশের সহযোগিতা পাবেনা বলে কোন অভিযোগ করা হয়নি বলে জানায় ইউসুফ। আরেক দোকানদার শহীদুল জানায়, আপেলের ভোট করায় তাদেরকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয়নি হাফিজুর রহমান ও তার ভাই মিজানুর রহমান। নির্বাচনের পরে সাইদুর ও হাবিবুর তাদের পরিবারের লোকজনসহ বাড়িতে থাকতে পারছেনা বলেও জানায় শহীদুল। দেবীনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, ভোটের ফলাফল ঘোষনা হবার পর তিনি ইউনিয়ন পরিষদে অবস্থান করছিলেন। নৌকার বিজয় মিছিল থেকে তাদের দোকানে হামলা হয়েছে স্বীকার করে তিনি বলেন, তেমন কিছু ভাংচুর করা হয়নি। তবে তিনি উল্টো হাবিবুর ও সাইদুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ভোটের আগের রাতে হাবিবুর ও সাইদুর তার ভাই মিজানুর রহমান, ছেলে রাইহান ও ভাতিজা ফয়সালের উপর হামলা করে তাদের আহত করে। এবিষয়ে তিনি সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান। এবিষয়ে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম আলমগীর জাহান বলেন, বিষয়টি জেনেছি, এব্যাপারে অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।