চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোচিং সেন্টারে কলেজ ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক শামিম রেজা লিপ্টনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) সকালে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে তাকে আটক করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ। পিস কোচিং সেন্টারের ভেতরে এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে অভিভাবক ও স্থানীয়রা-শিক্ষক শামিম রেজা লিপ্টনকে বেধড়ক মারধর করে। এসময় স্থানীয়রা জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) রাতে কলেজ ছাত্রীর মা বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত শিক্ষক শামিম রেজা লিপ্টন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার পিস কোচিং সেন্টারের পরিচালক ও রেহাইচর এলাকার বাসিন্দা। ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর স্বজন, স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের মতো বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) ভোরে কোচিং সেন্টারে যায় ওই কলেজ ছাত্রী। এ সময় কোচিং সেন্টারের শিক্ষক শামিম রেজা লিপ্টন তার শ্লীলতাহানি করেন। বাড়ি ফিরে বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানান ভূক্তভোগী কলেজ ছাত্রী। এরপর বিকেলে আবারও কোচিং সেন্টারে যায় ভুক্তভোগী ছাত্রী। এ সময় আবারও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করলে স্থানীয় বাসিন্দারা টের পেয়ে মারধর শুরু করে। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে, লম্পট শিক্ষক শামিম রেজা লিপ্টন এর ছবি বা ভিডিও নেয়ার জন্য বারবার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ কে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা অনুরোধ জানালে আইনের দোহায় দিয়ে ছবি বা ভিডিও দিতে রাজি হননি সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম আলমগীর জাহান। পরে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে পাঠানোর সময় সাংবাদিকদের ছবি বা ভিডিও নেয়ার জন্য সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে আসার জন্য বললেও কৌশল করে সকাল সোয়া ৯টার দিকেই আদালতে পাঠিয়ে দেন লম্পট শিক্ষক শামিম রেজা লিপ্টন কে, যেন মিডিয়াকর্মীরা শামিম রেজা লিপ্টন এর ছবি বা ভিডিও ধারণ করতে না পারে। এমন ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিডিয়াকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও নানা প্রশ্নের দেখা দিয়েছে। অনদিকে, বিকেলে লম্পট শিক্ষক শামিম রেজা লিপ্টন কে আটক করলেও তথ্য দিতে নানা টালবাহানা করেন সদর থানার ওসি। মিডিয়া কর্মীদের ফোন ও রিসিভ করেন নি তিনি।
পরে প্রায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে আটক ও মামলার কথা স্বীকার করলেও তথ্য নেয়ার জন্য সকাল পর্যন্ত সময় নেন। এরপরই লম্পট শিক্ষক শামিম রেজা লিপ্টন কে তাড়াহুড়ো করে আদালতে পাঠিয়ে দেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ছবি বা ভিডিও ধারণ বন্ধ রাখতে পারেন নি ওসি। থানা থেকে নিয়ে চলে যাওয়ার সময় কোনরকমে এবং আদালত থেকে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন মিডিয়াকর্মীরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম আলমগীর জাহান জানান, জরুরি সেবা ৯৯৯-এ খবর পেয়ে কোচিং শিক্ষক শামিম রেজাকে উদ্ধার করে আনা হয়েছিল। বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে মারধর করেছেন। এ ঘটনায় বুধবার রাতে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওসি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত কোচিং সেন্টারের শিক্ষক কলেজ ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির কথা স্বীকার করেছেন।