লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে মা আমেনা বেগমকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার দায়ে তার ছেলেকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামি উপস্থিততে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত রেদওয়ান হোসেন মিলন রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আশারকোটা গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে। লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন জানান, আসামি নিজেই তার মাকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। আদালত ও এজাহার সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে মিলন রাগান্বিত হয়ে তার মা আমেনাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ কাপড় ও কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টার দিকে ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে স্থানীয়রা তাদের বাসার জানালা দিয়ে দেখতে পায় মেঝেতে আগুন জ্বলছে। পরে দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে সবাই মেঝেতে আমেনার দগ্ধ লাশ দেখতে পায়। আগুনে আমেনার শরীরের বেশিরভাগ অংশই পুড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মিলনকে আটক করে। ওইদিনই নিহতের ভাই টিপু সুলতান বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে আসামি দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে বলা হয়, চিকিৎসার জন্য মিলনকে তিন জন ডাক্তার দেখায় তার মা আমেনা। এনিয়েই তিনি মায়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এতে ফজরের আজানের আগ মুমূর্তে মিলন তার মাকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে কাপড় ও কম্বল মুড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ২০২২ সালের ২২ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. অলিউল্লাহ আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করেন।