পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গবাদি পশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন রোগ। এতে গরুর খামারি ও কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে না পেরে অনেকে গরু কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ রোগ প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে, পল্লি চিকিৎসকরা প্রতিটি আক্রান্ত গরুকে পাঁচটি থেকে ২৫ টি পর্যন্ত ইনজেকশন দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের জয়ধরডাঙ্গা, বামনের কামাত, রতনীবাড়ীসহ সরেজমিনে গিয়ে আশপাশের কয়েকটি গ্রামে এই রোগের প্রার্দুভাব দেখা গেছে। গত ১৫ দিনে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে কয়েক শতাধিক এবং কয়েকটি গরু মারা যাওয়ার খবর জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারেননি প্রাণিসম্পদ বিভাগ। চাকলাহাট ইউনিয়নের সাদ্দাম হোসেন অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক দুলাল, আরমান, রহম আলী, একটি গরু অসুস্থ হলে ২০ থেকে ২৫ টি ইনজেকশন অসুস্থ গরুর শরীরে পুশ করে। এরপরেও গরু সুস্থ না হলে আরমানের সাথে যোগাযোগ করা হয়। পরে তিনি না এসে তার ভাতিজাকে পাঠিয়ে দিয়ে আবার চার থেকে পাঁচটি ইনজেকশন দেয় কিছুক্ষণ পরেই গরুটি মারা যায়। যার বাজার মুল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা। বামনের কামাত গ্রামের হারুনুর রশিদ বলেন, গতবারেও তার একটি গরু প্রথমের জ্বর এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুলে গিয়ে গরুটি মারা যায়। এবারও কয়েকটি গরু অসুস্থ হলেও সরকারিভাবে গরুর টিকা, চিকিৎসা বা পরামর্শ তিনি পাননি। একই এলাকার সুবর্ণা বেগম জানান, তার পালিত তিনটি গরুই এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। প্রথমে তার গরুর জ্বর আসে। সাথে মুখ দিয়ে লালা ঝরার পাশাপাশি নাক দিয়ে পানি পড়ে। এখন গোটা শরীর জুড়ে গুটি উঠে ক্ষত তৈরী হয়েছে। পারুল আকতারের এ রোগে একটি গরু মারা গেছে, যার বাজার মুল্য প্রায় ৪০ হাজার টাকা। বর্তমানে আরেকটি গরু অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। অনেক টাকা খরচ করেছি কিন্তু কোন উন্নতি হয় নি। এ ব্যাপারে পঞ্চগড় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো.আব্দুর রহিম প্রতিবেদককে জানান, জেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের টিম প্রতিনিয়ত চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে আসছে। তেমন কোন সমস্যা হবে না। আর যেসব পল্লী চিকিৎসক ভুল চিকিৎসা দিয়ে মানুষকে হয়রানি করছে, তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।