চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের কালিনগর এলাকার একটি রাস্তা মেরামত কাজ ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে একই ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য ফেরদৌসী বেগমের বিরুদ্ধে।
গোমস্তাপুর উপজেলার তথ্য মতে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম পর্যায়ের কাজের বরাদ্দ ছিল ৫ লক্ষ টাকা। সে কাজটি মেরামতের দায়িত্ব নেন বোয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের ইউপি সদস্য ফেরদৌসী বেগম। এই মেরামত কাজ নিয়ে এলাকাবাসীর নানা অভিযোগ।
সারেজমিনে গিয়ে ঐ রাস্তার অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। রাস্তাটি মেরামতের গাফেলতির জন্য চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তার মাঝখানে বেশ বড় বড় গর্তসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক মহিলা জানান, এর আগে রাস্তাটি ভাল ছিল। রাস্তায় মাটি ফেলে আরও রাস্তাটি খারাপ করে দিয়েছে। যে টাকা বরাদ্দ ছিল সে টাকার কাজ করলে রাস্তাটি পাকা হয়ে যেত। রাস্তাটি জনগণের চোখকে ফাঁকি দিয়ে তিলকে তাল বানিয়ে কাজ করা হয়েছে এবং রাস্তাটিতে অনিয়মের ফলে সরকারি বরাদ্দের টাকা হরিলুট হওয়ায় জনদুর্ভোগের শিকার হবে। এতে করে এলাকাবাসির চলাচলে রাস্তাটি কোন কাজে আসবে না বলে মনে করছে স্থানীয় এলাকাবাসী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান ৬০-৭০ গাড়ি মাটি ফেলে ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কে ম্যানেজ করে সব টাকা গিলে ফেলেছে ওই এলাকার সংরক্ষিত সদস্য ফেরদৌসী বেগম। তাদের প্রশ্ন-সঠিক কাজ না করে ৫ লক্ষ টাকা কিভাবে উঠিয়ে নেয় ফেরদৌসী বেগম। রাস্তাটির সঠিক কাজ না দেখে বিল পাস কেন করল গোমস্তাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান। এ নিয়েও এলাকায় জনগণের মাঝে নানা প্রশ্ন। দ্রুত এই রাস্তাটি পাকা করে দেওয়ার জোর দাবিও জানান ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সংরক্ষিত ইউপি সদস্য ফেরদৌসী বেগমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কাজ করেছি। এ বিষয় নিয়ে (পিআইওর) সাথে আপনারা কথা বলেন। আমি আর কিছু বলতে পারব না, বলেই মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন এই নারী ইউপি সদস্য।
রাস্তা মেরামতের নামে এমন অনিয়ম নিয়ে বোয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামিউল আলম শ্যামলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ইন্ডিয়ায় এসেছি। ওই কাজের বিষয়ে আমি শুনেছিলাম যেতেও চেয়েছিলাম। কিন্তু কোন কাজের কারণে যাওয়া হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোমস্তাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাস্তাটি এক বছর আগেকার রাস্তা।
রাস্তাটি মেরামতের নামে বিভিন্ন অনিয়ম করেছেন ইউপি সদস্য এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিবেদককে এড়িয়ে যান প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান।
পিআইও আরও বলেন, স্টেটমেন্ট জেলায় চলে গেছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রথম পর্যায়ে কাজ ছিলো সেটি। রাস্তাটির কাজ হওয়ার পরেও এলাকাবাসী অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ, তারপরও বিল পাস কিভাবে হলো প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি। এবিষয়ে গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা খাতুন বলেন, রাস্তা মেরামতের নামে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতি কেউ করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।