ক্যাম্পগুলো ছেড়ে পালাচ্ছে রোহিঙ্গারা। পালানোর সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে ৩৪৭ রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালানো রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এতে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। চলতি সপ্তাহেই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পৃথক অভিযানে কাজের সন্ধানসহ নানা অজুহাতে পালানোর চেষ্টা করা ৩৪৭ রোহিঙ্গা আটক করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সদরস্থ লিংকরোড সড়কে টেকনাফ-কক্সবাজার মুখি প্রতিটি গাড়ি তল্লাশী চালিয়ে অবৈধভাবে ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ৫৮জন রোহিঙ্গাকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এর আগে মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) উখিয়া-টেকনাফ মহাসড়ক ও ক্যাম্পের প্রবেশ এবং বহিঃগমণ পথে চেকপোস্ট বসিয়ে সারাদিন যৌথ অভিযান চালায় উখিয়া থানা পুলিশ ও ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন (এপিবিএন)। অন্তত ১০টি চেকপোস্টে চলা এই অভিযানে বিভিন্ন ক্যাম্পে বাস করা ২৬০ জন নানা বয়সী রোহিঙ্গা ধরা পড়ে। বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ক্যাম্পের বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তারপরেও ক্যাম্প ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করা রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা অব্যাহত আছে। আটকের পর সতর্ক করে বেরিয়ে পড়া রোহিঙ্গাদের স্ব-স্ব ক্যাম্প ইনচার্জ কার্যালয়ে ফেরৎ পাঠানো হচ্ছে।
৮ এপিবিএনের অধিনায়ক আমির জাফর (ডিআইজি) এ প্রসঙ্গে বলেন, ক্যাম্প এলাকার আভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি রোহিঙ্গারা যেন পালিয়ে অনত্র যেতে না পারে সে দিকেও কঠিন নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কর্মকতা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন আহম্মেদ জানায়, আটককৃত রোহিঙ্গারা বিভিন্ন কাজের সন্ধানে বের হয়েছিল। কাঁটাতারের বেড়া ও ক্যাম্পের অভ্যন্তরে এবং সড়কের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত ১০টি চেকপোস্ট ফাঁকি দিয়ে কিভাবে রোহিঙ্গারা দেশে ছড়িয়ে যাচ্ছে, এ বিষয়ে কঠোর নজরদারী করা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, শরনার্থী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা বেষ্টনী ফাঁকি দিয়ে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে কৌশলে পালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। এভাবে পালাতে গিয়ে প্রায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ধরা পড়ছে তারা। কাজের সন্ধানে তারা ক্যাম্প থেকে বের হয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। পাশাপাশি প্রায় অশান্ত হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো। ক্যাম্পে মাদক বিক্রি এবং মাদকের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়েও ঘটেছে অনেক মারামারি-খুনাখুনি। এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর একইভাবে অভিযানে উখিয়ায় আটক হয় আরো ২৯ রোহিঙ্গা।