1. tohidulstar@gmail.com : sobuj ali : sobuj ali
  2. ronju@chapaidarpon.com : Md Ronju : Md Ronju
জয়পুরহাটে নিম্নমানের আলু বীজে বাজার সয়লাব ॥ ঝুঁকিতে কৃষক - দৈনিক চাঁপাই দর্পণ
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
রহনপুর রেলওয়ে শুল্ক স্টেশনের অবকাঠামো উন্নয়ন বিষয়ে মতবিনিময় বান্দরবানে কেএনএফের আস্তানায় যৌথ বাহিনীর অভিযান, নিহত ৩ গোপালগঞ্জে পৃথক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪ পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করলেন বাবর আলী বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন ॥ প্রার্থীদের জরিমানা! রাসিক মেয়রের সাথে প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সমিতি নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ অ্যাওয়ার্ড পেলেন ‘জাসাস’ সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল ইসলাম স্বেচ্ছাসেবকলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মেহেদি হাসান নামে শিক্ষার্থীকে হত্যা মিরপুরে লাঠি হাতে অটোরিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ নাচোলের প্রবীণ সাংবাদিক মানিকের ডান চোখে সফল অস্ত্রপচার সম্পন্ন

জয়পুরহাটে নিম্নমানের আলু বীজে বাজার সয়লাব ॥ ঝুঁকিতে কৃষক

নিরেন দাস-জয়পুরহাট
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১০১ বার পঠিত

জয়পুরহাটে নিম্নমানের আলু বীজে বাজার সয়লাব ॥ ঝুঁকিতে কৃষক

কয়েকদিন পরেই জয়পুরহাটের কালাইয়ে ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর সদর উপজেলা কৃষদের আলু রোপণ শুরু হবে। তার আগেই কালাই উপজেলায় সক্রিয় প্রভাবশালী বীজ আলু ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট চক্র। এ চক্রের সদস্যরা প্রতিদিন গভীর রাতে কয়েকটি হিমাগারে সংরক্ষণ করা তাঁদের কম দামের লোকাল আলু প্যাকেট করে সেগুলোর ওপর নামসর্বস্ব বিভিন্ন কোম্পানির লোগো ও নাম ব্যবহার করে বীজ হিসেবে বাজারে ছাড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু বস্তার ওপর সাঁটানো লোগোতে দেওয়া ঠিকানার কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার বীজ আলুর বস্তায় সাঁটানো ওইসব সংস্থাকে জয়পুরহাট জেলা বীজ প্রত্যয়ন বিভাগ থেকে প্রত্যয়নও দেওয়া হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, ওইসব বীজ আলু জমিতে রোপণ করলে, কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। তাই কৃষকদের দাবি, কৃষকদের স্বার্থে অবিলম্বে জেলার বীজ আলুর ব্যাবসায়ী ও ডিলারদের গোডাউন তল্লাশি করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বীজের মান যাচাই-বাছাই করবেন। সেই সাথে তাঁদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখবেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে জেলার কালাই উপজেলার এম ইশরাত হিমাগার, সালামিন ফুডস লিমিটেডসহ কয়েকটি হিমাগারে রাতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। অনুসন্ধানের সময় উপজেলার বালাইট গ্রামে অবস্থিত সালামিন ফুডস্ লিমিটেড নামে হিমাগারে গিয়ে দেখা যায়, বীজ আলুর বস্তার ওপর-মহিববুল্লাহ্ সীড ১২-১৩, ঠাকুরগাঁ সীড, পপুলার সীড, বাদশা সীড, সুবর্ণা সীডসহ বিভিন্ন কোম্পানির নামের লগো সাঁটাচ্ছেন শ্রমিকরা। গভীর রাতেই সেগুলো জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন আলু ব্যাবসায়ীদের গোডাউনে সরবরাহ করা হয়। এসব বীজ আলুর মালিককে-? সেখানে শ্রমিকদের সে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে, তাঁরা তাদের ভয়ে নাম প্রকাশের অস্বীকার জানায়। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, প্রভাবশালী ঐসব বীজ আলু ব্যবসায়ীরা স্থানীয় কিছু অর্থলোভী গণমাধ্যম কর্মীদের মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে, আর এই ভাবেই প্রতি গভীর রাতে অবাধে এমন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এতে করে লোকসানের ঝুঁকিতে পড়ছেন এলাকার কৃষকেরা। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও কৃষি কর্মকর্তাদের নাকের ডগায় এমন অপকর্ম চালালেও অজ্ঞাত কারণে নিরব থেকেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা।
এই বিষয়ে বীজ আলু ব্যবসায়ী বজলুর রহমান জানান, আলু তোলার মৌসুমে ঠাকুরগাঁয়ের বাদশা সীড কোম্পানির কাছ থেকে তিনিসহ উপজেলার নান্দাইল লকইর-নান্দাইল গ্রামের এফতাদুল, হারুঞ্জার সাইদুর এবং উদয়পুরের লালমিয়া বাদশা এবং আরও কয়েকজন মিলিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার বস্তা কিনেন। এরপর সেগুলো নিজেদের নামে জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলার- সালামিন ফুডস্ লিমিটেড, এম ইসরাত হিমাগার, সুবর্ণা হিমাগার এবং নিউ কাফেলা হিমাগারসহ কয়েকটি হিমাগারে সংরক্ষণ করেন। এ জন্য তাঁদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও আছে। তাঁর (বজলুর রহমান) দাবি, টাকা দিয়ে আলু কিনে তো আর অন্য কারো নামে বা কোম্পানির নামে-তা হিমাগার সংরক্ষণ করা যায় না। তাই তাঁরা সেগুলো নিজের নামে নিজের পছন্দের হিমাগার সংরক্ষণ করেছেন। এখন ওই কোম্পানির লোগো ব্যবহার করে সেগুলো বাজারে ছাড়ছেন। এদিকে, জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার এম. ইসরাত হিমাগারে সম্প্রতি রাত সাড়ে এগারোটায় গিয়ে দেখা যায়-প্রায় ২ হাজার বস্তায় ১২-১৩ নাম দিয়ে কম দামের লোকাল বীজ আলু ভরিয়ে সেগুলো প্যাকেট করছেন শ্রমিকরা-উপজেলার একডালা গ্রামের রুবেল হোসেন এবং তাঁর ভাই জুয়েলসহ অনেকেই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই আলুগুলো কালাই উপজেলার পুনট এলাকার প্রভাবশালী মিঠু ফকিরের। সেগুলো ওই রাতেই ট্রাকে লোড করে জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মাটিঘর এলাকায় রবি নামের একজন আলু ব্যবসায়ীর গুদামে মজুদ করা হয়। পরে সেই কম দামের লোকাল বীজ আলু উচ্চ দামে বিক্রি করছেন। মুঠোফোনে মিঠু ফকির এ নাম প্রকাশ না কারার সত্বে এক আলু বীজ ব্যবসায়ী জানান, আলুগুলো তিনি কালাই উপজেলার এম ইশরাত হিমাগারে লোকাল বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করেছিলেন। এখন আলুর রোপণ মৌসুম হওয়ায়, সেগুলো বাদশা সীড ১২-১৩ নাম দিয়ে বস্তাবন্দি করে বাজারে ছাড়ছেন। তবে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে আলু ব্যবসায়ী রবিকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি প্রতিবেদকের সাথে দেখা করবেন বলেন। আর সাথে সাথে ফোনের লাইন কেটে দেন। কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের আলু চাষী কৃষক জাহাঙ্গীর, সিরাজুল, উদয়পুর ইউনিয়নের ছামছুন, আনিছুর, জিন্দারপুর ইউনিয়নের সাজু, ইয়াসিন,আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের আক্তার হোসেন, আল-আমীন ও কালাই পৌরসভার এনামুল, তাহেরসহ অনেকেই জানান, হিমাগারে লোকালভাবে সংরক্ষণ করা আলুগুলো বিভিন্ন নাম সর্বস্ব কোম্পানির নাম ও লগো ব্যবহার করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। এসব বীজ ব্যবহার করে, কৃষক লোকসানের মুখে পড়তে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের দাবি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে তদারকি করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
এ বিষয়ে কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন,এম ইসরাত হিমাগারে রাতে কোন একটি কোম্পানির লগো ব্যবহার করে, লোকাল বীজ আলু বস্তাবন্দী করা হচ্ছে- এমন খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক কৃষি বিভাগ থেকে লোক পাঠানো হয়। সে সময় লোকাল ভাবে সংরক্ষিত বীজ আলু কোন লোগো ব্যবহার না করে-সাদা বস্তায় ভরে বাজারজাত করতে বলা হয়েছে।
জয়পুরহাট জেলা বীজ বিপণন কর্মকর্তা রতন কুমার রায় বলেন, কালাই উপজেলার বিভিন্ন হিমাগারে মানহীন খাবার আলুকে বীজ হিসেবে প্যাকেট জাত করা হচ্ছে- এমন তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে জরুরী মিটিং করাও হয়েছে। এখন ছক অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা মো. শামীম বলেন, মহিববুল্লাহ্ সীড নামে জয়পুরহাটের কোন কোম্পানিকে প্রত্যয়ন দেওয়া হয়নি। আমরা এ বিষয়ে ইতোমধ্যে জেনেছি-বীজ নিয়ে অপতৎপরতা চালাচ্ছে একটি চক্র। এ বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে। খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা কৃষি সস্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মোছা. রাহেলা পারভীন বলেন, জেলার কোন হিমাগারে বীজ আলু বস্তাজাত করা না হয়-সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বলবো। তবে নির্দেশনা দেওয়া আছে, মানহীন বীজ যাতে কেউ বা কোন চক্র বাজারজাত করতে না পারে-সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে মনিটরিং শুরু করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
Copyright All rights reserved © 2024 Chapaidarpon.com
Theme Customized BY Sobuj Ali
error: Content is protected !!