1. tohidulstar@gmail.com : sobuj ali : sobuj ali
  2. ronju@chapaidarpon.com : Md Ronju : Md Ronju
জয়পুরহাট-১ আসনে আ’লীগের অবস্থান শক্তিশালী ॥ পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি - দৈনিক চাঁপাই দর্পণ
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ১১:২৬ পূর্বাহ্ন

জয়পুরহাট-১ আসনে আ’লীগের অবস্থান শক্তিশালী ॥ পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি

নিরেন দাস-জয়পুুরহাট
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৮৪ বার পঠিত

জয়পুরহাট-১ আসনে আ’লীগের অবস্থান শক্তিশালী ॥ পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি

জয়পুরহাট সদর ও পাঁচবিবি এ দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত জয়পুরহাট-১ নির্বাচনি এলাকা। আগে এ আসনটি বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল, কিন্তু গত ১৫ বছরে এ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে। বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ অতীতের চেয়ে অনেক বেশি শক্ত অবস্থানে থাকলেও বিএনপি তার নিজেদের দুর্গকে পুনরুদ্ধার করতে চায়। এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা জনসংযোগ চালানোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে লবিং করছেন মনোনয়নের আশায়। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু। এলাকায় বেশ উন্নয়ন করেছেন তিনি। পুনরায় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় আছেন তিনি।
জয়পুুরহাট জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি সাবেক জয়পুুরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান রকেট আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান। তার বাবা মরহুম আব্বাস আলী মণ্ডল সাবেক সংসদ সদস্য ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তা ছাড়া তার পিতা আওয়ামীলীগের দুর্দিনের কান্ডারি ছিলেন, সে কারণে তিনি এমপি পাওয়ার দাবিদার বলে জানান।
এ ছাড়া জয়পুুরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল জেলার বিভিন্ন স্থানে জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মণ্ডল তিনিও নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে জনসংযোগ করে চলছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম সোলায়মান আলীও দলের মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা তার নিজ বাড়ি জয়পুরহাটে হওয়ায় তিনিও প্রার্থী হতে পারেন। জয়পুরহাট পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, পাঁচবিবি পৌরসভার বর্তমান মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব ও জয়পুরহাট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলামও নিজেদের এমপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে অনেকেই এলাকায় পোস্টার লাগিয়ে এলাকাবাসীর দোয়া চেয়েছেন। অনেকে আবার ফেসবুকের মতো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। জয়পুরহাট-১ আসনটি বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও ২০১৪ সালের নির্বাচনে না যাওয়ায় আসনটি তাদের হাতছাড়া হয়ে যায়।
জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. সামছুল আলম দুদু জানান, এলাকার উন্নয়ন দেখেই আওয়ামীলীগ সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা ভেঙে গেছে। সাধারণ জনগণ ও দলীয় কর্মীরা সবসময় তাদের বিপদে-আপদে আমাকে কাছে পায়। তাই আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড. নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল জানান, দীর্ঘদিনের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং জেল-জুলুম সহ্য করে আওয়ামী লীগ করে যাচ্ছি। মনোনয়ন দেওয়া হলে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হতে পারব। জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাড. মোমিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমি বিলবোর্ড ও পোস্টার টাঙানো নীতিতে বিশ্বাস করি না। সততা, নিষ্ঠা ও প্রবীণ হিসেবে দলে আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে, সে ক্ষেত্রে দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি জয়ী হব। জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম সোলায়মান আলী বলেন, নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। এ জন্য মনোনয়ন বোর্ড আমাকে মনোনয়ন দেবেন বলে আমি মনে করি। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মণ্ডল বলেন, আমি মনোনয়ন পাব বলে আশা করছি। এ জন্য মাঠে কাজও করছি। জয়পুরহাট পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, ভোটারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। আমাকে মনোনয়ন দিলে জনগণের পাশে আগে যেভাবে ছিলাম এখনও থাকব।
পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র ও পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করব।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমি জয়পুরহাট-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গোলজার হোসেন। তিনি জেলার সব ইউনিয়ন, থানা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো নতুন করে তৈরি করে বিএনপিকে গতিশীল করার চেষ্টা করছেন। বিগত সময়ের বিএনপির চেয়ে বর্তমানের বিএনপি অনেক শক্তিশালী হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
বিএনপির বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে সাধারণ নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই গোলজার হোসেনও দলের মনোনয়ন চাইবেন। এ ছাড়া বিএনপির প্রার্থী হতে কাজ করে যাচ্ছেন ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক পৌরসভার মেয়র, বিশিষ্ট শিল্পপতি ফজলুর রহমান। বিএনপি থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য মোজাহার আলী প্রধানের পুত্র জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা প্রধান। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মমতাজ আলী মণ্ডলের পুত্র সাবেক চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি শিল্পপতি আনোয়ারুল হক আনু আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সাবেক এমপি ও মন্ত্রী আবদুল আলীমের পুত্র ফয়সাল আলীম কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ঢাকায় অবস্থান করলেও মাঝেমধ্যে জয়পুরহাটে এসে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এবার বিএনপি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য গণসংযোগ শুরু করায় ঝিমিয়ে পড়া বিএনপি চাঙ্গা হচ্ছে। বিএনপির হাতছাড়া হওয়া আসনটি উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজ উদ্দিন মণ্ডল বলেন, বর্তমানে আওয়ামী সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করে এ দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করতে চায়। তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। তবে বিএনপি নির্বাচনে গেলে তিনি মনোনয়ন চাইবেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফয়সাল আলীম জানান, দল নির্বাচনে গেলে আমি প্রত্যাশী এবং দল থেকে মনোনয়ন পেলে অবশ্যই আমি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হব।
সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান জানান, দল থেকে মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করব, না পেলে দল যাকে দেবে তার হয়ে কাজ করব। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক গোলজার হোসেন বলেন, তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া দল নির্বাচনে যাবে না। যদি দল নির্বাচনে যায় আমি দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা প্রধান জানান, জয়পুরহাট-১ আসনটি নিজেদের দখলে রাখতে চায় বিএনপি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনি জোট হলে জোটের প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করবেন জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আ. স. ম মোক্তাদির তিতাস মোস্তফা। আর জোট না হলেও জাতীয় পাটির একক প্রার্থী হবেন তিনি। মোস্তফা বলেন, গত নির্বাচনে আমাকে মহাজোটের প্রার্থী করা হয়েছিল। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি নির্বাচন থেকে সরে গিয়েছিলাম। কেন্দ্রের গ্রিন সিগন্যাল নিয়ে আমি মাঠে কাজ করছি। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে জেলা জামায়াত। জোটবদ্ধ নির্বাচন হলে জামায়াতের জেলা আমির ডা. ফজলুর রহমান সাঈদ জোটের পক্ষে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। আর স্বতন্ত্রভাবে ভোট করলেও তিনিই হবেন জামায়াতের প্রার্থী। ডা. ফজলুর রহমান বলেন, এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্দিষ্ট ভোট ব্যাংক রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
Copyright All rights reserved © 2024 Chapaidarpon.com
Theme Customized BY Sobuj Ali
error: Content is protected !!