দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি মানাতে প্রথম ধাপে মাঠে নামছেন অন্তত ৮০২ জন নির্বাহী হাকিম। ভ্রাম্যমান আদালত আইনের আওতায় তারা ২৮ নভেম্বর থেকে দেশের ৩০০ নির্বাচনি এলাকায় ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত নিয়োজিত থাকবেন এসব হাকিম। ৭ জানুয়ারির ভোটের আগে-পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে থাকবে আরও নির্বাহী হাকিম। দ্বিতীয় ধাপে মোবাইল, স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে আরও নির্বাহী হাকিম যোগ হবেন। এরপর ভোটের আগ দিয়ে তাদের সঙ্গে আরও নির্বাহী হাকিম যুক্ত হয়ে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবেন। প্রথম ধাপের নির্বাহী হাকিমদের চাহিদা সুনির্দিষ্ট করে বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে পত্র দিয়েছেন ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান। সেখানে বলা হয়েছে, দেশে উপজেলা পর্যায়ে ৫২৫ জন, জেলা সদরের পৌরসভায় ২১০ জন ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬৭ জন নির্বাহী হাকিম দরকার। এর বাইরে দরকার হলে বিভাগীয় কমিশনারের পরামর্শ নিয়ে প্রতি জেলায় দুয়েকজন নির্বাহী হাকিম নিয়োজিত রাখতে পারেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারির এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর; বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি করা হবে ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে ইসি বলেছেন, ভোটের কয়েকদিন আগে থেকে ভোটের দু’দিন পর পর্যন্ত অথবা কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে মোবাইল, স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে বিশেষ করে বিজিবি বা ‘অনুরূপ বাহিনীর’ প্রতি টিম বা প্লাটুনের সঙ্গে নির্বাহী হাকিম নিয়োজিত থাকবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, আচরণবিধি মানাতে প্রথম ধাপে প্রতি তিন ইউনিয়নে একজন, প্রতি পৌরসভায় তিনজন এবং সিটি করপোরেশনের প্রতি তিন ওয়ার্ডের জন্য একজন করে নির্বাহী হাকিমকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে ২০ নভেম্বর প্রস্তাব পাঠায় ইসি সচিবালয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দুই ধাপে নির্বাহী হাকিম নিয়োজিত রাখার বিষয়ে সার্বিক পরিস্থিতি ও বাস্তবতা বিবেচনা করে প্রাক্কলিত সংখ্যা জানিয়ে ইসি সচিবালয়কে অবহিত করে। এরপর ইসি সচিবালয় সুনির্দিষ্ট সংখ্যক নির্বাহী হাকিমের চাহিদা জানিয়ে চিঠি দিল।
একই সময়ে ৩০০ নির্বাচনি এলাকায় ৩০০ জন বিচারিক হাকিমও থাকবেন, তারা নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটিতে কাজ করবেন। যুগ্ম জেলা জজ বা সিনিয়র সহকারী জজের সমন্বয়ে ৩০০ নির্বাচনি এলাকায় বৃহস্পতিবারই ‘নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি’ গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রতি নির্বাচনি এলাকায় কমিটির সঙ্গে দুজন অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্য নিয়োগের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় যানবাহন বরাদ্দের জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি দিয়েছে ইসি সচিবালয়। ভোটের ফল গেজেট আকারে প্রকাশ পর্যন্ত এ কমিটি নির্বাচনি অনিয়ম রোধে কাজ করবে।