চাল ও ধান অবৈধভাবে মজুদ রাখায় পোরশার আব্দুল গণির গুদামঘর সিলগালা ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মনিরুজ্জামান। নওগাঁর পোরশা উপজেলার নিতপুর পূর্বদিয়াড়াপাড়ায় বৃহস্পতিবার (১লা ফেব্রুয়ারি) আনুমানিক সন্ধ্যা রাত ৭:০০ ঘটিকার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মনিরুজ্জামান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আব্দুল গণি নামক এক ব্যক্তির চাউলের গোডাউনে অভিযান চালায়। এ সময় ৪০ মেট্রিক টন চিনিগুড়া চাল ও ৩০ মেট্রিক টন ধান দেখতে পায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মনিরুজ্জামান এর জিজ্ঞাসাবাদে মজুদদার আব্দুল গণি স্বীকার করেন ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে তিনি এই চাল অবৈধভাবে মজুদ করে রেখেছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৩০ মেট্রিক টন ধানের গুদাম সিলগালা করে এবং এক দিনের মধ্যে এ ধান খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাসহ নিত্যদিনের বাজার দরে বিক্রি করার নির্দেশ দেন গুদাম মালিক আব্দুল গণি কে।
গুদাম মালিক আব্দুল গণির চাউল ব্যবসায়ী হিসেবে খাদ্য অধিদপ্তরের কোনরূপ লাইসেন্স না থাকায় কৃষি বিপণন আইন ১৯ এর ১ (খাদ্যশস্য সরবরাহ) ধারায় ৪০ মেট্রিক টন চিনিগুড়া চাউল মজুদ রাখায় ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন পোরশার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মনিরুজ্জামান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মোবাইল কোর্টের নির্বাহী অফিসার, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা, পুলিশ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ সহ উৎসুক এলাকাবাসী। এসময় সংবাদ সংগ্রহে গেলে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সামনেই ‘দৈনিক চাঁপাই দর্পণ’ এর পোরশা প্রতিনিধি নাহিদ আলীকে প্রাননাশের হুমকি সহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এঘটনায় পোরশা থানায় জিডি করেছে সাংবাদিক নাহিদ আলী।
জানা গেছে, এই আব্দুল গণি বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশিত তালিকাভুক্ত পোরশা উপজেলার ১নং রাজাকার হাজি সমসের আলীর চতুর্থ পুত্র। স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের হলেও অজ্ঞাত ইশারা ও ক্ষমতাবলে আব্দুল গণিসহ রাজাকারের ৩ ছেলেই বর্তমান সরকারের আমলে ক্ষমতাসিন আওয়ামীলীগের নেতা। স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারের ছেলেকে স্বাধীনতা পক্ষের দলের এবং ক্ষমতাসিন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে এমন অমার্জনীয় অপরাধের সাথে যাঁরা জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ স্থানীয় নেতা-কর্মীদের। নেতাকর্মীরা বলেন, যাদের রক্তে মিশে আছে রাজাকার, তাদের দ্বারা তো ভালো কিছু আশা করা যায় না। তারাই আজ এ ধরনের ধান চাল মজুদসহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের সাথে যুক্ত। পূর্বেও তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত আসানুরূপ কোন ব্যবস্থা হয়নি।
দলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে, দ্রুত এর সমাধান এবং রাজাকারের ছেলেকে আওয়ামীলীগ দলের নেতার আসনে বসানোর দায়ে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক বলেও জানান নেতা-কর্মীরা। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশিত রাজাকারের তালিকাভুক্ত পোরশা উপজেলার নিতপুর পূর্ব দিয়ারাপাড়ার রাজাকার হাজি সমসের আলী ও মোসা. নুরজাহানের পুত্র হাজি আব্দুল গনি, আব্দুল ওয়াদুদ ও মো. আব্দুল মতিন।