৩০ নভেম্বর আয়করের মেয়াদ শেষ হলেও দুই মাসের সময় বৃদ্ধির পর আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি এবার এ খাত থেকে রাজস্ব আহরণেও ‘উল্লেখযোগ্য’ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এবার আগের করবর্ষের একই সময়ের চেয়ে ৫ লাখ বেড়ে ৩৫ লাখের বেশি করদাতা ২০২২-২৩ করবর্ষের আয়কর বিবরণী জমা দিলেও এখনও তা মোট কর শনাক্তকরণ নম্বরের (টিআইএন) চেয়ে অনেক কম। মোট ৯৭ লাখের কিছু বেশি টিআইএনধারীর মধ্যে জমা দিয়েছেন মাত্র ৩৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
তবে আগের করবর্ষের চেয়ে রিটার্ন জমা দেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর সমন্বয় অনুবিভাগের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী গত বুধবার (৩১ জানুয়ারি) পর্যন্ত মোট ৩৫ লাখের বেশি আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছে। আগের করবর্ষের তুলনায় তা ৫ লাখ ১১ হাজার ৭৪৫টি বা ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রিটার্ন জমা পড়েছিল ৩০ লাখ ২৮ হাজার। এবার ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত জরিমানা ছাড়া ২০২২-২৩ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দেওয়া হয়। প্রতি করবর্ষে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জরিমানা ছাড়া রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থাকলেও এবার বিশেষ বিবেচনায় তা বাড়ানো হয়। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর অনুরোধে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই মাস সময় বাড়ানো হয়। এবছর রিটার্ন দাখিল বাড়ার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আহরণেও, প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
এ বিষয়ে এনবিআরের সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ প্রতিবেদককে বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে রিটার্ন দাখিলের হার উল্লেখযোগ্যভাবে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। একই সঙ্গে আয়কর খাত থেকে রাজস্ব আহরণও বাড়ছে। রাজস্ব আহরণ বাড়াতে পরিকল্পনা অনুযায়ী এনবিআরের ধারাবাহিক কার্যক্রমের ফল এটি। বিশেষ করে আয়কর খাত থেকে ১৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি নিয়ে আমি বিশেষ আশাবাদী।
রিটার্ন দাখিলের বর্ধিত সময় শেষে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, আগেরবারের চেয়ে ২০২২-২৩ করবর্ষে ৫ লাখের বেশি রিটার্ন দাখিল হওয়ায় রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। গত ২০২১-২২ করবর্ষে আয়কর রিটার্ন খাত থেকে আদায় হয়েছিল প্রায় ৪ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। এ হিসাবে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার বেশি বা ১৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
আয়কর রিটার্ন জমা ও রাজস্ব আহরণের এ হিসাব ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপরও জরিমানাসহ আরও কিছু শর্ত সাপেক্ষে রিটার্ন জমা দেওয়ার সুযোগ থাকছে। এতে আরও বেশ কিছু বিবরণী দাখিল হতে পারে। বিশেষ করে প্রথমবার রিটার্ন দাখিলকারীদের অনেকে তা জমা দিতে পারেন। তাদের জন্য বিশেষ সুযোগ হিসেবে আগামী ৩০ জুন/২৪ পর্যন্ত কোন জরিমানা ছাড়া বিবরণী জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।