বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা রাজনৈতিক নয়। বিএনপি সব জায়গায় কান্নাকাটি করে বলছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা। তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে মামলাগুলো কিসের মামলা? অগ্নিসন্ত্রাস, অস্ত্রপাচার, গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা। তারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গণভবনে সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, তারা ৩ হাজার ৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে, বাস, লঞ্চ, রেল পুড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো কি হবে। ওদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা তো পলিটিক্যাল মামলা না, প্রত্যেকটা মামলা হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাসের মামলা, তারা মানুষ হত্যা করেছে আগুন দিয়ে, ২৮ অক্টোবর যে ঘটনা তারা ঘটালো নির্বাচন ঠেকাতে যেয়ে রেলে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে পুড়িয়ে মেরেছে, যারা এগুলো করলো তাদের বিরুদ্ধে কি মামলা হবে না? তাদের কি মানুষ পূজা করবে। এসব মামলা আরও দ্রুত শেষ করে শাস্তি দিয়ে দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামীলীগ প্রতিশোধপরায়ণ না দেখে বিএনপি এখনো কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে, তাদের ভাগ্য ভালো আমরা ক্ষমতায় আছি, তারা সারাদিন কথা বলে মাইক লাগিয়ে, তারপর বলবে কথা বলার সুযোগ পায় না।
বিরোধীদলে থাকার সময়কার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অফিসে তো আমরা ঢুকতেই পারতাম না। কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে আমাদের ওপর, আমরা তো তার কিছুই করি নাই। আমরা প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত থাকিনি। আমরা আমাদের সব শক্তি-মেধা কাজে লাগিয়েছি দেশের উন্নয়নে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে। কৃষি সমবায়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। জাতির পিতার দেখানো পথে সমবায় কৃষি নিশ্চিত করা হলে দেশে কখনো খাদ্যের অভাব হবে না। তিনি বলেন, একসময় যারা নুন ভাতের কথা বা ডাল ভাতের কথা চিন্তা করতে পারতো না, এখন তারা মাছ-মাংস, ডিমের কথাও চিন্তা করে। ফলে যারা সরকারের সমালোচনা করেন তাদের সেগুলো মাথায় রেখে উন্নয়ন হয়েছে কি না তা বিবেচনা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীজ উৎপাদনে বিএডিসিসহ নানা গবেষণা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল নানা সময়ে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই কৃষি গবেষণায় জোর দেয়। বীজ, মাছ, ধান, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন বাড়িয়ে বিদেশি নির্ভরতা কমিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ সরকার। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করছে। তিনি বলেন, খাদ্য সংরক্ষণ, খাদ্য ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের জন্য নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি কৃষকদের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার ফলেই এদেশের কৃষি সমৃদ্ধ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি কখনোই চায়নি এদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হোক, তারা চেয়েছে অন্য দেশ থেকে ভিক্ষা করে দেশ চালাতে। আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। কৃষকের অধিকার রক্ষায় ১৯৭২ সালের এই দিনে ১৯ এপ্রিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতাকর্মীসহ সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকাল সাড়ে ৬টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৭টায় মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে ধানমন্ডির ৩২ পর্যন্ত আনন্দ শোভাযাত্রা, সকাল সাড়ে ৭টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর সকাল ১০টায় গণভবনে আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় এবং কেক কাটা অনুষ্ঠানে যোগ দেন নেতাকর্মীরা।