নওগাঁর নিয়ামতপুরে গাহইল খাল পুনঃখননের কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় লোকজন গাহইল খাল পুনঃখননে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বলছেন, খাল খনন করে নালা বানানো হচ্ছে। এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে যেভাবে খাল খনন করা হচ্ছে, তা কোনো উপকারে আসবে না। একটু বৃষ্টি হলেই খাল পাড়ের মাটি এসে নালা ভরাট হয়ে যাবে। যে উদ্দেশ্যে খালটি সরকার খনন করছে যা বৃথা যাবে। উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৮২ লক্ষ ৬৪ হাজার ১৯১ টাকা ব্যায়ে নিয়ামতপুর-গাহইল পর্যন্ত ৫ দশমিক ৪ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করার কাজ পায় গাহইল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি। যেখানে ৪টি আরসিসি রেফারেন্স-লাইন সেকশন নিমার্ণ, ২ টি উপ-প্রকল্পের চিহ্নিতকরণ সাইনবোর্ড ও ২ টি উপ-প্রকল্প এলাকা নির্দেশনা থাকবে।
সরজমিনে মঙ্গলবার গাহইল খালে গিয়ে দেখা যায়, এক্সকাভেটর দিয়ে গাহইল খালের তলদেশ থেকে পলিমাটি তুলে খালের পাড়েই রাখা হচ্ছে। খালটি খননে যে নীতিমালা ছিল তা বাস্তবায়ন হয় নি। মূলত খালটি খনন করে এখন একটা নালায় রুপান্তর করা হয়েছে। একটু জোরে বৃষ্টি হলেই ওই মাটি ধসে পুনরায় ভরাট হয়ে যাবে নালাটি। খালের প্রস্থ হওয়ার কথা ছিল ১০ ফুট, বাস্তবতায় খালটি খনন করা হচ্ছে ৭-৮ ফুট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, শিডিউল অনুযায়ী খালটি খনন করা হচ্ছে না। ফলে খালটি পুনঃখননের নামে নালা বানানো হচ্ছে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে গাহইল খাল পুনঃখননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা কোনো কাজে আসবে না। তলার পলিমাটি তুলে পাড়ে রাখা হচ্ছে। যা কিছুদিন যেতে না যেতেই পুনরায় খালগর্ভে ধসে পড়বে। এ খাল খননে বরাদ্দকৃত টাকা কোনো কাজে আসবে না বলেও তাঁরা দাবি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিয়ামতপুর গাহইল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি শাহজাহান আলী বলেন, সব কিছু তদারকি করছে নিয়ামতপুর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও জেলা ইঞ্জিনিয়ার। তাদের কথামত আমরা কাজ করছি। এক্সকাভেটর মেশিন ব্যবহারের বিষয় আমার জানা নেই। তবে যতটুকু সম্ভব প্রাক্কলন অনুসারেই খননকাজ হচ্ছে। গভীরতার বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ সত্য নয়।
এক্সকাভেটর মেশিনের মালিক রাজু বলেন, আরে ভাই এই বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাইন না। কাজ আনতে অনেক টাকা লাগে। প্রায় দশ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে সমিতির সভাপতির এ কাজ আনতে। অফিসের লোকেরা মাপজোগ করতে তেল খরচসহ বিভিন্ন খরচ দিতে হয়।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন বলেন, কাজের ৭৫% মেশিন দ্বারা এবং ২৫% লেবার দ্বারা বাস্তবায়িত হবে। আর খননের বিষয়ে সু-নির্দিষ্ট কোন কিছু নাই। কোথাও ২ ফিট, কোথাও ৩ ফিট কোথাও ৬ ফিট খনন করা লাগতে পারে। নিয়ামতপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে যতটুকু জানি, কাজ চলমান রয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনেই খাল খননের কাজ হচ্ছে। খাল খনন কাজে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই।