হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ত্ব-সীন ইলাহীর টিম এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশনগরী খ্যাত টেক্সাসের হিউস্টন শহরে অবস্থিত নাসার ঐতিহাসিক জনসন স্পেস সেন্টার অ্যান্ড স্পেস সেন্টার হস্টনে অবস্থান করছে। যদি নায়াগ্রার চূড়ান্ত পর্বে উঠতে পারলেই প্রত্যেকে পাবে মিনলো কলেজে অধ্যয়নে ৮০ হাজার, লুইস অ্যান্ড ক্লার্ক কলেজে ৬০ হাজার এবং ক্লার্কস্টোন ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নের ৬০ হাজার ডলারের শিক্ষাবৃত্তি। রানার্সআপ দলের সদস্যরা ৫ লাখ ডলার নগদ পুরস্কার। ত্ব-সীন ইলাহীর প্রজেক্ট যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা আয়োজিত বিশ্বের মর্যাদাসম্পন্ন উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা ‘নাসা কনরাড চ্যালেঞ্জে’ পুরো বিশ্বের মধ্যে এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ক্যাটাগরিতে ১০ম স্থান অধিকার করে। বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের সমন্বিত দলটির নাম ‘নট এ বোরিং টিম’। বিশ্বের ৫০টি দেশের ৩৫০০ প্রতিযোগী অংশ গ্রহণ করে। বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ত্ব-সীন ইলাহী।
উল্লেখ্য, ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত কনরাড চ্যালেঞ্জে নেতৃত্ব দেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. ত্ব-সীন ইলাহী। সেখানে নতুন মেন্টর হিসেবে পাশে পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টনের পিএইচডি রিসার্চার সালমান প্রোমন।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার কনরাড চ্যালেঞ্জের চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিতে ২০ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের একমাত্র পতাকাবাহী টিম ‘এক্সো ম্যাক্স’।
ভিসা বাতিল আর দুবাইয়ে বন্যার কারণে নাসার প্রতিযোগিতায় লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে ‘নট এ বোরিং’ দলের ২ সদস্যকে ছাড়া এবার বিশ্বমঞ্চে পরিবর্তীত ‘এক্সো ম্যাক্স’ নামে হাজির হবে বাংলাদেশ। সাতটি ডিভাইসের সমন্বিত এআই-ভিত্তিক ভিহ্যাকেল সেফটি গার্ড ও অ্যাপ্লিকেশন স্মার্ট রোড সেইফটি বিস্ট নিয়ে এই দলের তিন সদস্য নাসার ঐতিহাসিক জনসন স্পেস সেন্টার এবং স্পেস সেন্টার হিউস্টনের ককপিটে উঠে ২৩ এপ্রিল। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে এই প্রতিযোগিতাটির আয়োজক নাসার কনরাড ফাউন্ডেশন। প্রতিযোগিতায় সহ-অধিনায়ক নাটোর সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাহদী বিন ফেরদৌসের সঙ্গে গবেষণা বিশ্লেষক হিসেবে থাকছে রাজধানীর লরেটো স্কুলের শিক্ষার্থী সানজীম হোসেন। এক্সো ম্যাক্সের প্রকল্পটি এ পর্বে ‘এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’ ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা করছে। শীর্ষ ৭-এ রয়েছে তারা। মোট ১০টি দলের নাম ঘোষণা করা হয়েছে প্রতি ক্যাটাগরিতে। এর মধ্যে প্রথম ৬-৭টি দল সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারবে। আর এই দলগুলোর কোনোটি অংশ নিতে না পারলে ক্রমান্বয়ে সুযোগ পাবে বাকি দলগুলো।
নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এই বিশ্বে মঞ্চে চূড়ান্ত হাসি হাসতে চায় বাংলাদেশের টিম এক্সো ম্যাক্স। এরপর তাদের স্বপ্ন, একদিন নিজেদের প্রযুক্তি স্যাটেলাইট তৈরি করা। দেশীয় প্রযুক্তিতে স্যাটেলাইট নিজের দেশ থেকে উৎক্ষেপণ করা। চন্দ্র ও মঙ্গল জয় করা। ২০০৮ সাল থেকে আয়োজিত হচ্ছে কনরাড চ্যালেঞ্জ। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা, নাসার হিউস্টন স্পেস সেন্টার, ডেল টেকনোলজিস-সহ মহাকাশ ও প্রযুক্তি জগতের বড় কিছু নাম এ প্রতিযোগিতা স্পন্সর করছে। এতে এবার প্রায় ৩ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ নিচ্ছে।