ভারতের কলকাতায় খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের (কালিগঞ্জ) সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় তল্লাশি চালিয়ে নিউ টাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হয়া পচে যাওয়া মাংসের টুকরো মানুষের। প্রাথমিকভাবে ফরেনসিক পরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য জানিয়েছেন। সোমবার (১০ জুন) কলকাতা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে। এদিকে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা ও অপহরণ মামলায় ঢাকায় গ্রেপ্তার সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ও ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়ার জামিন আবেদন নাকচ করেছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হক। বহুল আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা কলকাতা সিআইডি সূত্র মতে, কলকাতা বাগজোলা খাল থেকে উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়ও ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার হওয়া মাংস ও হাড় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের কি না, তা জানতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। সে কারণেই আজিমের পরিবারের সদস্যদের কলকাতায় আনা হচ্ছে। এদিকে, গ্রেপ্তারকৃত আসামি সিয়াম কলকাতার সিআইডিকে জানিয়েছে, তিনি পলাতক আখতারুজ্জামান শাহিনের অধীনে ৬০ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। শাহিনের নির্দেশেই তিনি জিহাদকে কলকাতায় এনে রাজারহাটে ভাড়ার ফ্ল্যাটে রেখেছিলেন। খুনের জন্য ব্যবহৃত অস্ত্র, প্লাস্টিক টলি ও ব্যাগ- সবকিছুই কেনা হয়েছিল নিউমার্কেট এলাকা থেকে। অন্য দুই অভিযুক্ত ফয়সাল ও মুস্তাফিজ মাংস কিমা করার মেশিন কিনে এনেছিলেন। এমপি আজিমকে খুন করার পর তার মাংস ও হাড় আলাদা করা হয়, তারপর ছোট ছোট টুকরো এবং কিমা করা হয় ওই মেশিনে। ওই মেশিন এখন কোথায় তা জানেন ফয়সাল। এর আগে রবিবার পশ্চিমবঙ্গের খাল থেকে উদ্ধার হয়েছে বড় ও মাঝারি সাইজের সাতটি এবং বুক ও পাঁজর-সহ ১২টি হাড়। হাড়গুলি মূলত হাতের এবং কোমর থেকে পায়ের হাঁটুর। মাংসের টুকরো ও হার উদ্ধার হলেও এখনো খোঁজ নেই আনারের মাথার খুলি ও খুনে ব্যবহার করা অস্ত্রের। সিয়াম জানিয়েছেন, তারা একটি গাড়ি ভাড়া করে এসে ট্রলি ব্যাগ থেকে হাড় ও মাথার অংশ ব্যাগে তুলে খালের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। এজাহার থেকে জানা গেছে, ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন আনোয়ারুল আজিম। বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচ দিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলে না তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজিম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।