চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বে ককটেল বিস্ফোরণে জিয়াউর রহমান হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। সোমবার রাতে নিহত জিয়াউরের স্ত্রীর মিলিয়ারা বেগম বাদী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহীদ রানা টিপুকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নারায়ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. রুহুল আমীনসহ ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৩০/৪০ জনকে। মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাজ্জাদ হোসেন। বাদী মিলিয়ারা এজাহারে উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামীর বংশের জমি থেকে আসামী আজিজুল হক লোকজন নিয়ে মাটিকেটে অন্যত্র বিক্রি করে অসছিল। পরে তারা ৩০/৩৫ পরিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও গোয়েন্দা বিভাগের কাছে অভিযোগ দেন। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করায় আজিজুল হক ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর স্বামীসহ তাঁদের খুন করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করতে থাকে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পরস্পর যোগসাজসে হত্যা করার জন্য গত ২৩ এপ্রিল বিকেল ৩টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহীদ রানা টিপুর নেতৃত্বে ককটেল হামলা চালায়। তাদের হাতে থাকা হাত বোমা ভর্তি ব্যাগ থেকে তফশীলের জমি দখল ও তাঁর স্বামীসহ বংশের লোকজনকে হত্যা করার জন্য বোমার বিষ্ফোরণ ঘটায়। উপর্যপুরি বোমা বিস্ফোরণের জনমনে আতংক সৃষ্টি হয়। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান টিপু বলে, যাকে সামনে পাবি-তাঁকেই খুন কর। হুকুম পাওয়া মাত্র আসামী আতাউর এবং টিপু নিজে তাঁদের বাড়ীতে বোমা নিক্ষেপ করে। বোমা বিস্ফোরণ হলে তাঁর স্বামী নিহত জিয়াউর রহমান আতংকিত হয়ে বাড়ির পেছনের দিকে পালানোর সময় তাঁর উপর বোমা নিক্ষেপ করা হয়। বোমার বিস্ফোরণে তাঁর স্বামীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বর যখম হয় এবং মৃত্যুবরণ করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, জিয়াউর হত্যার ঘটনায় তাঁর স্ত্রীর এজাহারের কপি আমরা রাতে হাতে পেয়েছি। এরপর রাতেই মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। প্রসঙ্গত, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে ককটেল বিস্ফোরণে জিয়াউর রহমান নিহত হন। ২৩ এপ্রিল বিকেলে উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের জনতারহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জিয়াউর সুন্দরপর ইউনিয়নের চন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের কসিমুদ্দীনের ছেলে। ইউপি নির্বাচনের সময় থেকে নারায়ণপুর ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রুহুল আমীনের সঙ্গে ও একই ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. আজিমের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছি। সম্প্রতি নদী থেকে মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে নতুন করে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। দুই পক্ষই ককটেল ও দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রতিপক্ষের ছোড়া ককটেল পিঠে বিস্ফোরণে মারা যান জিয়াউর। নিহত জিয়াউর রহমান সাবেক ইউপি সদস্য মো. আজিমের সমর্থক ছিলো বলে এলাকা সূত্রে জানাগেছে।