চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী মহাসড়ক। প্রতিদিনই হাজার হাজার যানবাহনের যাতায়াত এই রাস্তায়। প্রচন্ড তাপ ও অতিরিক্ত লোড নিয়ে ট্রাক ও অন্যান্য যানবহন চলাচল করায় দেবে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার হরিপুর এলাকায়।
শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েক মোঃ নবীর উদ্দিনের সমাধীস্থরের পাশর্^বর্তী মহাসড়কে এই অচালবস্থা হয়। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা। এসব দূর্ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত। যানবাহন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অনেক। চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন যানবাহন ও পথযাত্রীরা এবং এলাকার শিক্ষার্থীরা। গত ১৩ জুন এলাকাবাসী রাস্তাটি সংস্কারের দাবীতে ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেন। ঘন্টাবাপী রাস্তা বন্ধ থাকলে উভয় পাশে জানজটের সৃস্টি হয়। খবর পেয়ে ট্রাফিক বিভাগ ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাগণ গিয়ে সংস্থারের আশ^াস দিলে এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ তুলে নেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দূর্ঘটনা প্রতিরোধে তাৎক্ষনিক কোন ব্যবস্থা না নিয়ে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির দোহায় দিয়ে বসে আছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এলাকাবাসী ক্ষোভের সাথে জানান, এর আগেও একই স্থানে এভাবে দেবে গিয়ে অনেক মানুষ ও যানবাহন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ২০১৯ সালে নতুন করে কালভাট সেতু নির্মাণসহ রাস্তাটি সংস্কার করা হয়।
কিন্তু আবারও একই স্থান দেবে গিয়ে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকার মানুষ ও শিক্ষার্থী এবং চলাচলকারী যানবাহন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করে আছেন। কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। এই রাস্তা দিয়ে জেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণও যাতায়াত করেন। তারপরও কোন কর্মকর্তারই মাথাব্যাথা নেই। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবী যানবাহন চালক ও অন্যান্য যাত্রীদের।
হাবিবুর, মোঃ নাহিদুজ্জামান, ট্রাক চালক, অটো চালক, আহত মোটরসাইকেল চালক শুভ, মাববুব আলম, আনারুল ইসলাম, স্থানীয় দোকারদার ইদু সহ এলাকার অনেক ভূক্তভোগী জানান, প্রায় ৩ যুগ আগে ভারতীয় একটি কোম্পানীর হাতে সংস্কার হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী মহাসড়ক। প্রতিদিনই হাজার হাজার যানবাহনের যাতায়াত এই রাস্তায়। প্রচন্ড তাপ ও অতিরিক্ত লোড নিয়ে ট্রাক ও অন্যান্য যানবহন চলাচল করায় দেবে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার হরিপুর এলাকায়। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনামসজিদ স্থলবন্দরের সকল পণ্যবাহী ট্রাক ও অতিরিক্ত পাথর ও অন্যান্য মালামাল বোঝায় ট্রাকের লোড নিয়ে চলায় হরিপুরসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়কের অনেক স্থানে দেবে গেছে। হরিপুর এলাকায় প্রায় ২০দিন থেকে এ অবস্থা চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সড়ক ও জনপথ বিভাগের।
বিশেষ করে সন্ধার পর থেকে রাতের বেলায় ঘটছে ভয়াবহ দূর্ঘটনা। তাঁরা আরও জানান, গত ১৩ জুন দূর্ঘটনা ঘটেছে ১২টি, আহত হয়েছেন অনেকে। ১৪ জুন দূর্ঘটনা ঘটেছে ৫টি, এতেও আহত হয়েছে মোটরসাইকেল চালকসহ অন্যান্য পথযাত্রীরা। দ্রুত এসব দেবে যাওয়া ও ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা সংস্কার করে জনদূর্ভোগ নিরসনের জোর দাবী এলাকাবাসীর।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মেহদী খান জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে দেয়া হয়েছে। সোনামসজিদ স্থলবন্দর থেকে ট্রাকে পণ্য নেয়ার কথা ২০ থেকে ২৫টন, কিন্তু এক একটি ট্রাকে লোড নেয়া হয় ৪০ থেকে ৪৫টন। এর ফলেই রাস্তার এমন অবস্থা। বৈশিক তাপমাত্রার কারনে ও অতিরিক্ত পণ বোঝায় ট্রাক চলাচল করায় মহাসড়কের হরিপুরসহ বিভিন্ন স্থানে দেবে গেছে এবং ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এটা সময়ের ব্যাপার। ভবিষ্যতের জন্য ওভার লোড নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসানো হচ্ছে। সেটি হলে এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।