বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগের মুল্য দিতে হবে আমাদের। যাঁদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে আজ আমি চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেছি। তাদেরকে তো মুল্যায়ন করতে হবে। আর এটা যদি করতে না পারি, তাহলে শিক্ষার্থীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা হবে। দীর্ঘদিনের জঞ্জাল পরিস্কার করে সকলের সহযোগিতায় দূর্ণীতি-অনিয়ম দূর করে মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
বৃস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন নবাগত জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সামাদ। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই মতবিনিময় সভা হয়। সভায় জেলার বিভিন্ন সমস্যা ও করনীয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সামাদ বলেন, জেলায় দূর্ণীতি অনিয়মের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি পরিচালনা করা হবে। প্রথমেই জেলা প্রশাসনকে দূর্ণীতি-অনিয়মের জিরো টলারেন্স করা হবে। পর্যায়ক্রমে জেলার সকল দপ্তরের অনিয়ম দূর করা ও করনীয় বিষয় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জেলার বিভিন্ন দপ্তরের বিষয়ে করা তথ্য মনোযোগ সহকারে শোনেন। তিনি বলেন, আমি জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন-ভাতা পাই। জনগণের সেবা করার জন্যই সরকার আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন। আমার বেতনের টাকা যেন আমি হালাল করে ভোগ করতে পারি, সেই চেষ্টাই করি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সামাদ বলেন, জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আমের বিষয়েও আলোচনা করেন এবং করনীয় বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।
জেলার কল্যান ট্রাষ্ট এর যথাযথ ব্যবহার বিষয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, জেলার কোন ইট ভাটা থেকে জেলা প্রশাসনের কোন প্রয়োজনে অর্থ গ্রহণ করা হবে না। অবৈধ ইট ভাটার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত চালানোসহ সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলার বৃহৎ প্রকল্প ‘রাবার ড্যাম’ প্রকল্পের জমির মালিকদের নায্য মূল্য না পরিষোধ করায় বিষ্ময় প্রকাশ করেন এবং এব্যাপারে প্রযোজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলেন। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, জেলার পরিবেশ অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিকার, পাশপোর্ট অফিস, বিআরটিএ অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দেন। তিনি সাংবাদিকদের যথাসময়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা এবং সাধারণ মানুষের সমস্যা দূর করার কথাও বলেন সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে।
তিনি বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে সকল জঞ্জাল দূর করে জেলাকে একটি মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তোলার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। চাঁদাবাজি, মাদকসহ সকল অনিয়ম দূর করতে জেলার মিডিয়াকর্মীদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। সভায় জেলার বিভিন্ন সমস্যা ও করনীয় নিয়ে আলোচনা হয়। এসময় জেলার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক শহীদুল হুদা অলক, চ্যানেল আই’র প্রতিনিধি, ‘দৈনিক চাঁপাই দর্পণ এর প্রকাশক ও সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু, ‘দৈনিক গৌড় বাংলা’র প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ হাসিব হোসেন,
সাংবাদিক রফিকুল আলম, আজিজুর রহমান শিশির, মনোয়ার হোসেন জুয়েল, ফয়সাল মাহমুদ, ফারুক আহমেদ, তারেক রহমান, জহরুল ইসলাম, মোঃ নাদিম হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ আজিম আলী, ইসাহাক আলীসহ অনেকে। সাংবাদিকরা জেলার দূর্ণীতি ও অনিয়ম দূর করে একটি মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তোলার আহবান জানান। এসময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা মন্টু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব উল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রট মোঃ ইকতেখারুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার মোঃ আমিনুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসার মোঃ আব্দুল আহাদসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকগণ এবং প্রেসক্লাবের সভাপতি-সম্পাদকসহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।