চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের ধুলাউড়ি হাটে গুম হওয়া আরিফ কে ফিরে পেতে মানববন্ধন করেছে পরিবারসহ এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার সকালে গুম হওয়া আরিফুল ইসলাম ইসলাম এর স্ত্রী মোসাঃ মাজেরা বেগম লিখিত বক্তব্যে বলেন, তাঁর স্বামী মোঃ আরিফুল ইসলাম দেবীনগর দ্বিমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উত্তর পার্শ্বে আশার আলো কোচিং সেন্টার এন্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল সুনামের সহিত পরিচালনা করে আসছিলো। মাজেরা বেগম দুঃখের সাথে জানান, তাঁর নিরাপরাধ স্বামী আরিফুল কে গত ২০১৭ সালের জুলাই মাসের ১ তারিখ আনুমানিক দুপুর পনে ৩ টার সময় কোচিং চলাকালীন সময়ে আরিফুলের বাবা ও আরিফুল বিএনপি মতাদর্শি হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের স্থানীয় দোসরদের সহায়তায় জোর পূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরিবারে নেমে আসে এক কালো অধ্যায়। যখন আমি স্বামী হারার শোকে শোকাহত, তখন বিভিন্ন অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন করে জিডি কিংবা মামলা না করার জন্য হুমকি প্রদান করে। স্বামী আরিফুল কে অনেক খুঁজাখুঁজির পর কোন সন্ধান না পেয়ে সকল হুমকি উপেক্ষা করে জিডি করার জন্য থানায় গেলে কোন এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে আমার জিডি নেওয়াতো দূরের কথা, তৎকালীন ওসি আর থানায় না আসার জন্য হুমকি প্রদান করেন। তারপরও পরিবারের পক্ষ থেকে জিডি করার জন্য বার বার থানায় ধর্না দিলে আমাদেরও গুম করার জন্য হুমকি প্রদান করে। গুম হওয়া আরিফুল এর শোকে বাবা মোঃ বানী ইসরাইল ২০১৭ সালের ৫ আগষ্ট হঠাৎ প্যারালাইসেস হয়ে শারীরিক ভাবে কর্মক্ষমে অক্ষম হয়ে যায়। পরিবারে নেমে আসে আরও এক কালো অধ্যায়। বানী ইসরাইল দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর অসুস্থ থেকে গুম হওয়া ছেলে আরিফুলের শোকে ২০২২ সালে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। মাজেরা বেগম জানান, পুত্র শোকে তাঁর শাশুড়ী আরিফুলের মা মোসাঃ শরিফন বেগম তিনিও পূত্র শোকে দির্ঘদিন যাবৎ হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। আরিফুল এর স্ত্রী জানান, দুটি সন্তান নিয়ে অপেক্ষা করতে করতে পরিবারটা দুচোখে শুধু অন্ধকার দেখছেন। দুটি সন্তান নিয়ে ভরনপোষন ও পড়ালেখার খরচ চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
সন্তানদের একটি ভালো পোষাক কিংবা দুবেলা দুমুঠো ভাত ঠিকমত দিতে পারিনা। অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে গুম হওয়া আরিফুলকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জীবিত অবস্থায় ফেরৎ চান এবং এই গুমের সাথে যারা জড়িতদের বিচার চান মাজেরা।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, আরিফুলের মা শরিফুন বেগম, দেবীনগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আ ক ম সাহেদুল আলম বিশ্বাস পলাশ, দেবীনগর দ্বিমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ, জেলা যুবদলের আহবায়ক তবিউল ইসলাম তারিফ, এলাকাবাসীর পক্ষে দুরুল হুদা, আরিফের ছোট ভাই সোহেল রানা, মেয়ে মাহমুদা। মানববন্ধনে এলাকার ৫ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।