মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ার জেরে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার স্যানেটারি মিস্ত্রি রানা খান হত্যা মামলায় সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি রায়ে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। রায়ে বিচারক সাজাপ্রাপ্ত সবাইকে ৩০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডেরও আদেশ দিয়েছেন। রোববার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম। আইনজীবী জানান, এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত মোট ১৬ জন আসামির মধ্যে চারজনকে খালাস দিয়েছে আদালত। রায় প্রদানের সময় মোট নয় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মো. শিপন, রিপন মিয়া, আলাউদ্দিন, মো. জুয়েল, শুভ, কাজল ও হাবিব। এদের মধ্যে শিপন, রিপন ও আলাউদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন- বাদল মিয়া, জহিরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, ইকবাল হোসেন ও মো. সোহেল। এদের মধ্যে বাদল ও ইকবাল পলাতক। দণ্ডপ্রাপ্তরা কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা বলে জানান রফিকুল ইসলাম। তারা সবাই মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেও জানান তিনি। মামলার নথির বরাতে রফিকুল বলেন, মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়া নিয়ে বিরোধে ২০০৬ সালের ১ মে রাতে যৌনাঙ্গ ও গলাকেটে হত্যা করা হয় চম্পকনগর এলাকার স্যানিটারি মিস্ত্রি রানাকে। ঘটনার পরদিন রানার বাবা জাহাঙ্গীর খান ছয়জনকে আসামি করে কুমিল্লা কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তদন্তে আরও ১০ জনকে আসামি করে মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। ১৭ বছর পর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য আমলে নিয়ে রোববার দুপুরে এ রায় দেন ঘোষণা করেছেন আদালত। এ মামলায় মোট ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। তিনি আরও জানান, রায়ে বিচারক সাজাপ্রাপ্ত সবাইকে ৩০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডেরও আদেশ দিয়েছেন। ছেলে হত্যার বিচারের রায় পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন নিহত রানার বাবা জাহাঙ্গীর খান। তিনি দ্রুত রায় বাস্তবায়নের দাবি জানান। কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মুজিবুর রহমান জানান, রায় ঘোষণার পর আসামিদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।