বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়, বাংলাদেশ পুলিশ একটি গৌরবের নাম। দেশের সব অর্জনে বাংলাদেশ পুলিশ অনন্য ভূমিকা পালন করে আসছে। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে বাংলাদেশ পুলিশের অবদান অপরিসীম। বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীতে ১৬৪তম ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) ২০২১ ব্যাচের ৬ মাস মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আইজিপি আরও বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ সবসময় জনগণের প্রয়োজনে পাশে থেকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে।
করোনাকালে যখন পরিবারের আপনজনেরা ছেড়ে চলে গেছে, তখনও বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা ওই সব মানুষের পাশে থেকেছে। তাদের দেখাশুনা করেছে, নানাভাবে সহায়তা করেছে, মানুষের প্রয়োজনের স্বার্থে নিজেদের জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করেছে। এজন্য ১০৬ জন পুলিশ সদস্যকে জীবনও দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, সমাজ পরিবর্তনশীল, সমাজে সংঘটিত অপরাধও পরিবর্তনশীল। তাই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পুলিশ বাহিনিতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রযুক্তির সাহায্যে সাইবার অপরাধ দমনে পুলিশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তরুণ সমাজকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। সেইসঙ্গে সকল ধরনের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে তোমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। নিত্য নতুন টেকনিক ও কলাকৌশল সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে হবে, যাতে দেশের স্বার্থে কাজ করা যায়। প্রধানমন্ত্রীর উন্নত বাংলাদেশ গঠনে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের প্রতি আরও গুরুত্ব দিতে হবে। জনগণের সেবার জন্য জনগণের কাছের মানুষ হিসেবে প্রয়োজনে কাজ করতে হবে।
৬ মাস মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ সফলতার সঙ্গে শেষ করায় প্রশিক্ষণার্থীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্যের শুরুতে আইজিপি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ৭৫-এর ১৫ আগস্টে শহিদ সকলকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।এর আগে আইজিপি টিআরসিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজ প্রদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। প্যারেডে ১৬৪তম টিআরসি ব্যাচের মোট ৪৫৩ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন। কুচকাওয়াজ শেষে আইজিপি প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্য থেকে পৃথক বিষয়ে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত ২ জন টিআরসিকে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী বেগম জীশান মীর্জা, উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাগণ, রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধান, রাজশাহী ও নাটোর জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গসহ জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে আইজিপি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে টিআরসিদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন।