নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়কের হুমকিতে হাসপাতালে ভর্তি আছেন এক অধ্যক্ষ। অধ্যক্ষ ও সহকর্মীদের সুত্রে জানা যায়, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন প্রায়শই বাগাতিপাড়া বিএম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামসুন নাহার সিমাকে কলেজের কমিটি এবং আয় ব্যয়ের ব্যপারে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ওই অধ্যক্ষ তার কলেজে অসুস্থ হয়ে পড়লে, সহকর্মীরা তাকে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অধ্যক্ষ শামসুন নাহার সিমা জানান, গত কয়েকদিন থেকেই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন তাকে ফোন করছেন এবং তার কলেজের পরিচালনা কমিটিতে তার দেয়া ব্যক্তিদের নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। এমনকি তার সঙ্গে দেখা করার জন্য নির্দেশ দিয়ে আসছিলেন।
তিনি জানান, মোশাররফ হোসেন তার প্রতিষ্ঠানে রেজাউল নামের এক ব্যক্তিকে পাঠান। পরে গতকাল রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) উপজেলার মালঞ্চি বাজার রেল গেট এলাকায় মোশাররফের অফিসে ওই অধ্যক্ষকে ডেকে পাঠান। পরে ওই দিন দুপুরে অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেনের অফিসে গেলে, তিনি তার প্রতিষ্ঠানের সকল হিসাব-নিকাশ দাখিল করতে বলেন। সেইসঙ্গে আপাতত তার লোক রেজাউলকে প্রতিষ্ঠানের এডহক কমিটিতে রাখার জন্য নির্দেশ দেন। অধ্যক্ষ আরো জানান, পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে মোশারফের সঙ্গে আলোচনা করে, তার মনোনীত লোক দিয়ে কমিটি করার নির্দেশ দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানরা জানান, মোশাররফ হোসেন তাদেরকেও ফোন করে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেছেন এবং প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে তার লোক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিএনপির এই নেতা তাদের সঙ্গে প্রায় সময় খারাপ ব্যবহার করছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, আমরা সরকারি চাকরি করি, তাই কিছু বলতে না পেরে তার অসদাচরণ মুখ বুঝে সহ্য করছি। বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার রেজাউল করিম জানান, ওই অধ্যক্ষকে সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমরা প্রাথমিকভাবে তার ইসিজি করি। তাতে তার রিপোর্ট খারাপ আসে। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা এখানে তাকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিচ্ছি। অবস্থার উন্নতি না হলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে। এ বিষয়ে জানতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসকল অভিযোগ মিথ্যা। তবে ওই অধ্যক্ষ তার অফিসে গিয়েছিলেন এটা নিশ্চিত করে এই নেতা বলেন, তার সঙ্গে কোনো খারাপ ব্যবহার করা হয়নি।