চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মোঃ গোলাম কবিরের বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও সংগঠন বিরোধী, গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৫ অক্টোবর মঙ্গলবার ভোলাহাট প্রেসক্লাবের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বি.এম রুবেল আহমেদ ভোলাহাট প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে তাবাসসুম বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভোলাহাট প্রেসক্লাবের উন্নয়নের নামে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বরাদ্দকৃত ৪৫০০০ (পঁয়তাল্লিশ হাজার) টাকা এবং একই অর্থ বছরে ভোলাহাট প্রেসক্লাবের উন্নয়ন এবং খালে আলমপুর ক্যানেলের উপর ব্রীজের এ্যাপোচ ভরাটের নামে যৌথ প্রকল্পের প্রাপ্ত ২০ হাজার টাকা ভোলাহাট প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে থেকে উঠিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তিনি ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছর ও ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের জেলা পরিষদের বাস্তবায়নে ভোলাহাট প্রেসক্লাবের উন্নয়নের নামে মোট ১,০০০০০ (এক লক্ষ) টাকা হরিলুট করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগে আরও বলা হয়, স্বেচ্ছাচারিতার অংশ হিসেবে ভোলাহাট প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি ১৩ জানুয়ারি ২০২২ ইং তারিখ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় তাকে নতুন কমিটি গঠনের জন্য বললে তিনি সবসময় এড়িয়ে যান। তিনি ভোলাহাট প্রেসক্লাবের দোকানঘর ভাড়া একাই ভোগ করে আসছেন। এছাড়াও তিনি ‘ভোলাহাট সংবাদ’ (সাপ্তাহিক) পত্রিকার অফিস ভোলাহাট প্রেসক্লাবের জায়গায় ভোলাহাট প্রেসক্লাবের সিদ্ধান্ত ছাড়াই নিজের মত করে একাই স্থাপন করেছেন। গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উপর দায়িত্ব হস্তান্তর না করেই গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মনগড়া কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্ণীতিসহ স্বেচ্ছাচারিতার অনেক অভিযোগ বিদ্যমান আছে বলেও জানা গেছে অভিযোগে সূত্রে। ভোলাহাট প্রেসক্লাবের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি পুনর্গঠন সহ অনিয়ম-দূর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক বিচার করে অত্র প্রতিষ্ঠানের সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। প্রকল্পদাতা ও জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক সদস্য মোঃ পিয়ার জাহান অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ভোলাহাট প্রেসক্লাবে টাইলস বাবদ ১ লক্ষ টাকা দিয়েছি, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়েছে টেন্ডারের মাধ্যমে। ২৫ শতাংশও কাজ হয়নি-এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমি দিয়েছি, কিন্তু কতটুকু কাজ করেছে তা আমি জানিনা। এব্যাপারে ভোলাহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহ কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ভোলাহাট প্রেসক্লাবের প্রকল্পের ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা। এবিষয়ে ভোলাহাট উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম কবির জানান, অভিযোগকারী বিএম রুবেল আহমেদকে কয়েক মাস আগে প্রেসক্লাব হতে বহিস্কার করা হয়েছে। প্রেসক্লাবের মিটিং এ সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে। বহিস্কার করার পর থেকে সে মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ এনে সে আমার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ করেছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রকল্পের টাকা যথাযথ কাজে ব্যয় করা হয়েছে বলে দাবী করেন গোলাম কবির। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ কাউছার আলম সরকার জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে ভোলাহাট উপজেলা প্রেসক্লাবের অনুকুলে টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কাজ হয়েছে মর্মে ভাউচার জমাদানের পর টাকা ছাড় দেয়া হয়েছে। কাজ হয়েছে কিনা, তা নিজে দেখেছেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে পিআইও জানান, কাজ না হলে টাকা ছাড় দেয়ার প্রশ্নই উঠেনা। কাজ হয়েছে তাই টাকা ছাড় দেয়া হয়েছে। ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম বলেন, ভোলাহাট উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আগামী বুধবার (২ নভেম্বর) উভয় পক্ষকে শুনানীর জন্য ডাকা হয়েছে। শুনানীতে আসল ঘটনা উঠে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ইউএনও।