জ্যৈষ্ঠের খরতাপে তীব্র গরম বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গরমে কয়েকদিন ধরে মানুষ ও জীবজন্তু হাঁসফাঁস করছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ ঘরে বাইরে সবখানে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। দিনের বেলায় কাঠফাটা রোদ থেকে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিলেও উষ্ণ হওয়ায় সেখানেও মিলছে না স্বস্তি। শ্রমজীবী আর গণপরিবহনে যাত্রীদের অবস্থাও সংগীন। মিলছে না স্বস্তি। ঘর থেকে বের হলেই হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। সারাদেশে ন্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রতিটি উপজেলায় ঘামে ভেজা মানুষ খানিকটা স্বস্তির খোঁজ করলেও তা মিলছে না। ঘর থেকে বের হলে তীব্র গরমে শরীর থেকে ঘাম বেরিয়ে জামা কাপড় ভিজিয়ে অস্বস্তি তৈরি করছে। রাস্তাঘাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত সবখানে মানুষের শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে পড়ছে। কাজ রেখে মানুষ ব্যস্ত ঘাম মুছে ফেলার কাজে। ফ্যানের বাতাস ঘাম ঝরা বন্ধ করতে পারছে না। যারা এসিতে থাকেন তাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও এসি থেকে বের হলেই এক ঝাপটাই ভিজে যাচ্ছেন। গরমে জামা কাপড় পড়ে থাকা যাচ্ছে না। ফলে প্রচন্ড গরম দুর্বিষহ করে তুলেছে জনজীবন। মাঝেমধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিং হলেই হাতপাখায় মানুষের শরীর ঠান্ডা করতে পারে না। তখন মানুষ রাস্তায় নেমে আসে অতিরিক্ত গরমে। মানুষের শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিচ্ছে। অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। বিশেষ করে যারা শ্রমসাধ্য কাজ করেন তারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানা গেছে। আর রোগী, বয়োবৃদ্ধ ও শিশুরা একদম নাকানি চোকানি খাচ্ছে। এদিকে অফিসগামী মানুষ গরম উপেক্ষা করে সকালে অফিসে পৌঁছালেও তারপরের অংশ ইতিহাস। ভালো নেই দিনমজুর শ্রেণী মানুষ, রিকশাচালক, পরিবহন শ্রমিক, রাজ ও রংমিস্ত্রি, ঢালাই শ্রমিক থেকে শুরু করে ফুটপাতে ব্যবসায়ী, এমনকি ভিক্ষরাও নাকাল হয়ে পড়েছেন তীব্র গরম। এদিকে আম ব্যবসার সাথে জড়িত আমের বাইরাইল, আমপাড়া লেবার পথের পাশে একটু ছায়া পেলেই সেখানে বিশ্রাম নিচ্ছেন। উত্তাপের কারণে ঘরের ভেতরেও থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ফ্যান থাকলেও গরম বাতাসে গা ভিজে যাচ্ছে। দিনের বেলায় বাইরে থাকা আরও কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে গরমের কারণে। বেশি সময় যাত্রী পরিবহন করতে পারছেন না রিক্সা ও ভ্যান চালক। যাত্রী পরিবহন করতে চাইলে ভাড়া হাকছেন বেশি। রিক্সা চালকদের ভাষ্য, গরমের কারণে তাদের মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম হচ্ছে।
রোববার (০৪ জুন) দুপুর ২ টা ৫৫ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। তবে মোবাইল অ্যাপসে অনুভূত হয় ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মে মাসে সারাদেশের ন্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। জুন মাসেও সামগ্রিকভাবে স্বাভাবিক এর চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এ মাসে দ্বিতীয় সপ্তাহে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বর্ষাকাল বিস্তার লাভ করতে পারে। এছাড়া জুন মাসে অব্যাহত থাকতে পারে তাপদাহের দাপট। তাপমাত্রা কমতে পারে ২৪ থেকে ২৫ তারিখের পর।