চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চোর চক্রের ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় চারটি চোরাই ট্রান্সফরমার উদ্ধার করা হয়। বুধবার দুপুরে সদর থানায় প্রেস ব্রিফিং করে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দেবীনগর-সেলিমাবাদ গ্রামের খাইরুল ইসলাম, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের আমিনুল ইসলাম। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, চলতি মাসের শুরুতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চারটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এ নিয়ে আলাদা দুটি মামলা হলে তদন্তে নামে পুলিশ। এক পর্যায়ে মঙ্গলবার খাইরুল ও আমিনুলকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী চারটি ট্রান্সফরমার ও যন্ত্রপাতি উদ্ধার। এর আগেও ট্রান্সফরমার চুরির মামলায় গোলাম রশীদ রসুল ও মুরশালীন নামে আরো দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের আগের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের একটি সুত্র জানায়, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফার্মার চোর চক্রের মূল হোতাসহ মোট ৪ জন আসামী গ্রেফতার এবং চোরাই মালামাল উদ্ধার হয়। ৫ মার্চ দিবাগত রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানাধীন ইসলামপুর ইউনিয়নের নামোচরী এলাকা থেকে রাতের আধারে অজ্ঞাতনামা চোরেরা ৩ টি ট্রান্সফার্মার চুরি করে। ১৬ মার্চ দিবাগত রাতে অজ্ঞাতনামা চোরেরা ১ টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফার্মার চুরি করে। ২টি চুরির ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় ২০১৮ সালের বিদ্যুৎ আইনের ৩৫/৪০/৪১ ধারায় পৃথক পৃথক ০২ টি মামলা হয়। একটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন মাসুক রুপক।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার জনাব মো. ছাইদুল হাসান, বিপিএম-পিপিএম এর দিকনির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল মো. জাহাঙ্গীর আলম স্যারের তত্ত্বাবধায়নে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অজ্ঞাতনামা চোরদের সনাক্ত পূর্বক গ্রেফতার এবং চোরাই ট্রান্সফার্মার উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃজেলা চোর চক্রের মূলহোতা আসামী মো. গোলাম রসুল কে (৩০) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট থানার জামবাড়িয়া ইউনিয়নের হেলাচী গ্রামস্থ নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করা হয়। আসামী গোলাম রসুল’কে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে উল্লেখিত চুরির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। আসামী গোলাম রসুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় এবং দেখানো মতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভাধীন আজাইপুর ধানুরমোড়স্থ কাঁসারী ব্যবসায়ী আসামী মো. মোরসালিন’কে (৪৮) গ্রেফতার পূর্বক ৩ টি ট্রান্সফার্মার চুরির মালামাল উদ্ধার হয়। আসামী মোরসালিন বিজ্ঞ আদালতে ফৌ. কা. বি. ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রাদান করে এবং আসামী গোলাম রসুল’কে বিজ্ঞ আদালতের আদেশে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অপর চুরির ঘটনার সত্যতাও স্বীকার করে। চোর গোলাম রসুল তার সহযোগী ২ জন চোরের নামও প্রকাশ করে।
তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে চুরির ঘটনার সহিত জড়িত অপর আসামী শিবগঞ্জ থানার দেবীনগর সেলিমাবাদ গ্রামের আসামী খাইরুল খান (৩৭) এবং রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানাধীন মাটিকাটা গ্রামের আসামী মো. আমিনুল ইসলাম’কে (২৮) গ্রেফতার করা হয়। আসামী খাইরুল ও আমিনুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, ২টি চুরির ঘটনায় ৪ টি ট্রান্সফার্মার তারা ৩ জন মিলেই চুরি করেছে এবং কাঁসারী ব্যবসায়ী মোরসালিন’কে দ্বিতীয় চুরির মালামালগুলিও দিয়েছে বলেও জাানয়। আসামীদের দেখানো মতে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফার্মারের চুরির মালামালগুলি মোরসালিনের দোকান থেকে উদ্ধার করা হয়। উল্লেখ্য, আসামী গোলাম রসুল এবং আসামী খাইরুল খান একসঙ্গে জেলে থাকার সময় ট্রান্সফার্মার চুরির পরিকল্পনা করেছিল।