নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ সন্ত্রাসী হামলায় গুরুত্বর জখম হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার বেলা ১টার দিকে নলডাঙ্গা বাজারে তার ভাড়া করা বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত আসাদ ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলম জীবন হত্যাকান্ডের প্রধান অভিযুক্ত আসামী। তিনি হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। আহত অসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, গত ৪ অক্টোবর আমি হাইকোর্টে আত্মসমর্পন করে ৬ সপ্তাহের জামিন নিয়ে নাটোরে আসি। গত ১২ অক্টোবর তৌহিদুর রহমান লিটন ফেসবুক লাইভে এসে আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। জামিনে আসার পরে গত পরশু দিন থেকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে অফিস করছি। গতকাল তোহিদুর রহমান লিটন নামে একজন সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা আসাদুজ্জামান আমাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপার এবং নলডাঙ্গা থানার ওসিকে জানাই। রবিবার দুপরের দিকে তিনি পুলিশ ম্যাজিস্ট্রটের উপস্থিতিতে উপজেলা পরিষদে যান। এর আগে তৌহিদুর রহমান লিটনের নেতৃত্বে একটি মিছিল করে। ওই মিছিল থেকেও আমাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এরপর বেলা একটার দিকে নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের বাড়ির পাশে ভাড়া করা আমার বাসার সামনে পৌছিলে তৌহিদুর রহমান লিটন, ফুটু মাষ্টার, সেলিম মাস্টার, রইচ উদ্দিন আনোয়র হোসেন সাজ্জাদুর রহমান, লোকমান হাকিম, আমিরুল ইসলাম জনি সহ বেশ কিছু ব্যক্তি আমার ওপরে অতর্কিত হামলা চালায়। তিনি অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু এবং বর্তমান এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের যোগ সাজসে আমার ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমার বা আওয়ামীলীগের কোন নেতা কর্মির মৃত্যু হলে তারাই দায়ী থাকবে। আসাদের সহকারী বোরহান বলেন, প্রথমে তাকে লাটি সোটা দিয়ে মারপিটের এক পর্যায়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। কিন্তু আঘাত লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে চোখের ওপরে আঘাত লেগে তিনি গুরুতর আহত হন। পুলিশি হস্তক্ষেপে তিনি প্রাণে রক্ষা পান। পরে আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, আওয়ামীলীগের আভ্যন্তরীন বিরোধ থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। অথচ আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হচ্ছে। শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, তিনি এ হামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না। প্রকৃত পক্ষে ছাত্রলীগ নেতা জীবন হত্যাকান্ড ধামাচাপা দেয়ার জন্য পরিকল্পিত মিথ্যাচার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বলেন, আসাদ ফিরে আসার পর থেকেই নলডাঙ্গা বাজারে উত্তেজনা চলছিল। যে কারণে নলডাঙ্গা বাজারের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। কিন্তু অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে তার ভাড়া করা বাসার সামনে আসাদ হামলার শিকার হন। তখন সেখানে কোন পুলিশ ছিল না। পুলিশ অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে তৎপর রয়েছে। উল্লেখ্য আসাদুজ্জমান আসাদ ও তার ভাইদের হামলায় ছাত্রলীগ নেতা জামিউল ইসলাম জীবন গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই মামলায় আসাদ প্রধান অভিযুক্ত আসামী।