চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৫ জন পিছিয়ে পড়া দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষাবৃত্তির চেক তুলে দেয়া হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের সোসাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন-এসডিএফ এর আরইএলআই প্রকল্পের আওতায় মঙ্গলবার বিকেলে এই শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন। সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন-এসডিএফ এর রেজিলিয়েন্স, এন্ট্রাপ্রেনিওরশীপ এন্ড লাইভলিহুড ইমপ্রুভমেন্ট (আরইএলআই) প্রকল্পের আওতায় তিন বছর মেয়াদী বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবৃত্তির আওতায় প্রত্যেক শিক্ষার্থী পাবে ৭২ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) প্রথম বছরের প্রত্যেককে ২৪ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম, এসডিএফ-এর আঞ্চলিক পরিচালক মো. হেদায়েত উল্লাহ, জেলা ব্যবস্থাপক মো. মাহাবুবুর রশীদসহ শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সরকার এই উপবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে আপনাদেরকে সহযোগিতা নয়, আপনাদের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। আপানারাও নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করে দেশ ও জাতির কল্যানে নিজেকে নিয়োজিত করবেন। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সরকার শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষিখাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ সহায়তা প্রদান করছে।
বিদ্যুৎ ও সারে ব্যাপকহারে ভর্তুকি দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কেউ যাতে গৃহহীন না থাকে সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে জমিসহ ঘর প্রদান করছে সরকার। শিক্ষাবৃত্তি হিসেবে প্রদান করা টাকার পরিমাণ হয়ত বেশি নয়। কিন্তু দুঃসময়ে এই অর্থ শিক্ষার্থীর জন্য পড়াশোনার খরচ হিসেবে চরম উপকারী। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের গোকুল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল অহিদ বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও পড়াশোনার শঙ্কায় পড়েছিলাম। অটোরিকশা চালক বাবার পক্ষে এতো খরচ করে পড়াশোনা করানো আমাদের কাছে বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই মনে হয়নি। হঠাৎ এসডিএফ এর বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবৃত্তির বিষয়টি জানতে পেরে আবেদন করি। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় এভাবে পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এসময় বক্তারা বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে অতিদরিদ্র ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীতে আয়বর্ধনমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্তকরণ, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সহায়তা, গ্রামে স্থায়ী ও টেকসই সংগঠন তৈরি, সুবিধাবঞ্চিত ও সহায়সম্বলহীনদের জন্য এককালীন অনুদান প্রদান, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, বেকার যুবদের কর্মসংস্থান, জীবিকা উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান, জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে আগামী ৫ বছর (২০২১-২০২৬) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাসহ বাংলাদেশের ২০টি জেলার ৩ হাজার ২০০ গ্রামে এসব কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে।