ভরপুর ইরি-বোরো ধান খাটার সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় চলছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই। তবে দেখা দিয়েছে চরম শ্রমিক সংকট। অতিরিক্ত ধান বা টাকা দিয়েও ধান কাটা ও মাড়াইয়ের শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চাষিরা। এদিকে ঈদের আগে ও পরে বয়ে যাওয়া ঝড়ো হাওয়া ও বৃস্টিতে মাঠের পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে। এ ধান এখন ঘরে তুলতে কৃষক পড়েছেন নানা কস্টে। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর ৬ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ৬৩২ মেঃটন। ধান কাটা শুরু হয়েছে এক সপ্তাহ ধরেই। তবে কয়েকজন চাষি জানিয়েছেন, এবার ধানের ফলন ভালো হলেও শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। বরেন্দ্র এলাকায় ধানের উৎপাদন বেশি হওয়ায় শ্রমিকেরা নিজ উপজেলা বাদ দিয়ে বেশী আয়ের আশায় বরেন্দ্র অঞ্চলে চলে গেছেন। ফলে বেকায়দায় ভোলাহাটের বোরো চাষিরা। বিলভাতিয়ায় গিয়ে দেখা গেছে শ্রমিক না পেয়ে নিজ জমিতেই ধান কাটছেন শহিদুল ইসলাম। তিনি ক্ষাভের সাথে জানান, তিনি একজন ইলেক্টিসিয়ান হবার পরও শ্রমিক না পেয়ে বাধ্য হয়ে নিজেই ধান কাটতে আরম্ভ করেছেন। তিনি জানান, এবার নিজের ১২ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন তিনি। কিন্তু শ্রমিক না পেয়ে দোকান বন্ধ রেখে আত্মীয়-স্বজন ও ভাইকে নিয়ে ধান কাটছেন। ধান মাড়াইয়ের কাজটিও তাদের করতে হবে। আরেক কৃষক ইউপি সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, এবার ধানের ফলন ভালো তবে কিছু জমির ধান পোকার আক্রমনে ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকেরা বেশী আয়ের আশায় বরেন্দ্র অঞ্চলে ধান কাটতে চলে গেছে। আগে ছয়-সাতজন শ্রমিক এক বিঘা ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করে দিলে প্রায় আড়াই মন ধান দিতে হতো। এবার শ্রমিকেরা সাড়ে চার মণ চাচ্ছে। তাও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ধানের বদলে টাকা দিলে একজন শ্রমিককে এখন এক বেলার জন্যই দিতে হচ্ছে ৭’শ টাকা। গতবছর শ্রমিকের পারিশ্রমিক কম ছিল। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সুলতান আলী ধান কাটা কে কঠিন কাজ হিসেবে চিহ্নিত করে জানান, শ্রমিকেরা এসব কঠিন কাজ থেকে সহজ কাজে ঝুঁকে পরছেন। তাছাড়া বেশিরভাগ শ্রমিক বরেন্দ্র এলাকায় ধান কাটতে চলে যায়। এতে করে ভোলাহাটে শ্রমিক সংকট হয়েছে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য সরকার ভূর্তুকি দিয়ে আধুনিক যন্ত্র দিচ্ছেন। এসব যন্ত্র ব্যবহার করলে শ্রমিক সংকট দুর হবে।