দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠি ‘বসুন্ধরা গ্রুপ’র গুণি সাংবাদিক সম্মাননা পেয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীণ সাংবাদিক মোঃ তসলিম উদ্দিন। সারাদেশের মফস্বলের ৬৪ জন গুণি সাংবাদিককে খুঁজে বের করে বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের সংবর্ধিত করেছে এদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রবীন সাংবাদিক ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মোঃ তসলিম উদ্দিনও রয়েছেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরা কনভেশন সেন্টারে সারাদেশের ৬৪জন প্রাবীণ সাংবাদিকসহ ১১জন সেরা সাংবাদিককে উত্তরীয় পড়িয়ে দিয়ে সম্মাননা ক্রেষ্ট এবং ‘এক লাখ’ টাকা প্রদান করা হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সংবর্ধনা পেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রবীণ সাংবাদিক মোঃ তসলিম উদ্দিন বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ দিলে তা হবে নগন্য। কারণ জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে তুলে আনা ৬৪জন সাংবাদিককে সম্মননা প্রদান করে তারা সাংবাদিকতার দায়বদ্ধতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি জীবদ্দশায় এইসব সাংবাদিকরা আরও বেশি সমৃদ্ধ হলো। তাই তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে ঋণী হয়ে থাকলেন। তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, অনেকেই মনে করেন মফস্বলের সাংবাদিক মানেই অবহেলিত। কিন্তু বসুন্ধরা গ্রুপ সেই ধারণা পাল্টে দিয়ে সাংবাদিকদের যে সম্মান প্রদান করেছে, তাতে বসুন্ধরা গ্রুপের উত্তরোত্তর উন্নতি এবং বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান জনাব আহমেদ আকবর সোবহান এঁর দীর্ঘায়ু কামনা করছি, পাশাপশি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই সম্মাননা প্রদানের সাথে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের প্রতি রইলা কৃতজ্ঞতা। উল্লেখ্য, জেলার প্রবীণ সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ তসলিম উদ্দিন ১৯৪২ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার রানীহাটি ইউনিয়নের রশিকনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মরহুম এসার উদ্দিন মন্ডল ও মরহুমা এরাম নেসা’র ২য় ছেলে মোঃ তসলিম উদ্দিন বাড়ির পাশের চকঘোড়াপাখিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করে রানীহাটি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে ঢাকা বোর্ডের অধিন প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পরে রাজশাহী টিচার্স ট্রের্নিং কলেজ থেকে বি.এড ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৮সালে রানীহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে স্কাউট ট্রেণিংপ্রাপ্ত হন। তিনি শিবগঞ্জ থানায় শ্রেষ্ঠ স্কাউট শিক্ষক নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালে রানীহাটি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করার পর অবসর গ্রহণ করেন। অন্যদিকে, তিনি ১৯৭১সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৭নং সাব সেক্টরের মহদীপুরের অধিন বিনোদপুর খাসের হাট সাব সেক্টরের মুক্তিফৌজের জুনিয়র কমান্ডিং অফিসার হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একজন তালিকাভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭৪ সালে তিনি ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত হন এবং বর্তমানেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি কয়েকবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। ৮০ বছর বয়সেও তিনি সাংবাদিকতার কাজে জেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে চলেছেন। তিনি একাধারে একজন কবিও। তিনি অসংখ্য কবিতা লিখেছেন এবং কয়েকটি বইও প্রকাশিত হয়েছে প্রবীন সাংবাদিক তসলিম উদ্দিনের কবিতার। তাঁর লেখা অনেক কবিতা ছাপানো হয়েছে ‘দৈনিক চাঁপাই দর্পণ’ পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীণ সাংবাদিক মোঃ তসলিম উদ্দিন ‘বসুন্ধরা গ্রুপ’র গুণি সাংবাদিক সম্মাননা পাওয়ায় ‘চাঁপাই দর্পণ’ পরিবারের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন ‘দৈনিক চাঁপাই দর্পণ’ এর প্রকাশক ও সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু।