সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সারা দেশে চতুর্থ দফার অবরোধের শুরুতে ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাছের সড়কে রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে ঝটিকা মিছিল করেছে বিএনপি। মিছিলের শুরুতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, মিথ্যা-গায়েবী মামলা দিয়ে নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করে জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি বন্ধ করা যাবে না। সকাল থেকে সারাদেশে বিভিন্ন সড়কে জনগণ রাস্তায় নেমেছে। আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচিতে রাস্তায় আছি, আমাদের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় থাকবে। অবরোধে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা নাশকতা সৃষ্টি করে বাস পুড়িয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপানোর চক্রান্ত করছে অভিযোগ করে নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান রিজভী। রোববার সকাল ৭টায় ১৫/২০ জন নেতা-কর্মীকে নিয়ে আইডিয়াল স্কুলের পাশের সড়কে মিছিল করেন রিজভী। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম, পারভেজ রেজা কাঁকন, মাহবুবুল ইসলাম এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
মিছিল থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ‘৪৮ ঘণ্টার অবরোধ, চলছে চলবে’, ‘চলছে লড়াই চলবে, খালেদা জিয়া লড়বে’ শ্লোগান দেন। ১৫/২০ মিনিট মিছিলের পর রিজভী ওই এলাকা ত্যাগ করেন।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষের পর বিএনপি হরতাল ডাকে। এরপর একে একে তিন দফায় সাত দিন অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির সঙ্গে সমমনা জোট ও দলও এ কর্মসূচি পালন করছে। রোববার সকাল থেকে শুরু হয়েছে তাদের চতুর্থ দফার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ, যা মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত চলবে। অবরোধের মধ্যে যাত্রীর অভাবে দূর পাল্লার বাস ছাড়ছে না। তবে নগর পরিবহনের বাস, অটোরিকশা, রিকশা এবং ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে। নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীতে মোড়ে মোড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে। নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশি পাহারা আগের মতই আছে। কার্যালয়ের কলাসিবল গেইটে তালা ঝুলছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন, বাকিরা আছেন আত্মগোপনে। অজ্ঞাত স্থান থেকে প্রতিদিন বিকালে ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিঙে দলের পক্ষে বিবৃতি এবং কর্মসূচি ঘোষণা করছেন বিএনপি নেতা রিজভী। ঝটিকা মিছিল ছাড়া তাকেও বাইরে দেখা যাচ্ছে না।
২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে ১৩ হাজার ৩৮৬ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে দাবী বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর।